দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- কৈলাস থেকে ছেলেমেয়েদের নিয়ে
বাপের বাড়ি তথা মর্তলোকে ঘুরতে আসেন দেবী দুর্গা। তাই মায়ের জন্য থাকে এলাহি আয়োজন।
মণ্ডা-মিঠাই থেকে নানা রকমের মাছ থাকে মায়ের ভোগে। কিন্তু বাগদি বাড়ির পুজোতে ঘটে তা
অন্য চিত্র। এখানে মা দশভুজা নয়, চতুর্ভুজা দেবী দুর্গার ভোগে থাকে পান্তা ভাত আর পোড়া
রুটি। প্রায় ২০০ বছর ধরে চলে আসছে এই নিয়ম।
আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর পূর্বে বাঁকুড়া জেলার জয়পুর থানার
রাউৎখন্ড ছিল তৎকালীন বর্ধমান রাজা মাহাতব চাঁদের অধীনে। রাজামশাই বাগদী পরিবারের পদবী
দিয়েছিলেন আটপৌরি। সেই থেকে ওই গ্রামের নাম হয়েছিল আটপৌরি পাড়া। বর্তমানে এটি বাগদীপাড়া
নামে পরিচিত।
একদা এক আশ্বিনে ওই বাগদী পরিবারের কর্তা গ্রামের অদূরে এক
জলাশয়ে মাছ ধরতে যান। কিন্তু কিছুতেই তাঁর মাছ ধরার জাল একা সামলাতে পারছিলেন না।
ঠিক তখনই এক সুন্দর অপরূপা রমণী আসেন, এবং সাহায্যের প্রস্তাব দেন। বাগদী পরিবারের
ওই কর্তা আগন্তুক রমণীকে জিজ্ঞাসা করেন ‘তুমি কে মা’? উত্তরে ঐ রমণী জানিয়েছিলেন সে
বাগদী পরিবারেরই কন্যা।
মাছ ধরা শেষ হলে ওই বাগদী পরিবারের কর্তার সঙ্গে বাড়িও আসতে
চান ওই রমণী। বাগদী পরিবারের ওই কর্তা প্রথমে রাজি না হলেও পরে রাজী হয়ে যান তাঁকে
বাড়ি আনতে ।এরপর দুজনে গল্প করতে করতে গ্রামের দিকে রওনা হন। গ্রামের কাছাকাছি পৌঁছে
আর ওই রমনীর গলা শুনতে পাননি বাগদী পরিবারের কর্তা। পিছনে ফিরে দেখেন ওই রমণী আর নেই।
এরপর বাড়ি ফিরে আসেন বাগদী পরিবারের কর্তা। ওই রাতেই দেবী স্বপ্নে চতুর্ভূজা বৈষ্ণবী রূপে দেখা দেন বাগদি পরিবারের কর্তাকে। মা দুর্গা তাঁকে বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করার নির্দেশ দেন। বাগদি পরিবারের কর্তা মাকে অসহায়তার কথা জানালে দেবী নির্দেশ দেন প্রতিদিন বাড়িতে যে আহার হয় তা দিয়েই ভোগ দিতে। এই শুনে খুশি হয়ে যান বাগদি পরিবারের এই কর্তা। সেই থেকে চলে আসছে মায়ের পুজো। পান্তা ভাত আর পোড়া রুটি দেওয়া হয় ভোগে।