দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :সোমবার শ্রীনগরে ‘অপারেশন মহাদেব’-এ পহেলগাঁও হামলার তিন জঙ্গিকে খতম করেছে ভারতীয় সেনা। মঙ্গলবার লোকসভায় এই অভিযানের বিস্তারিত বিবৃতি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি জানান, ভারতীয় সেনা ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের যৌথ তৎপরতায় জঙ্গিরা পালানোর সুযোগ পায়নি। অভিযানে উদ্ধার হয়েছে সেই আগ্নেয়াস্ত্রও, যা পহেলগাঁওয়ে পর্যটক হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত হয়েছিল বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সোমবার শ্রীনগরের দাচিগাম জঙ্গলে নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে মৃত্যু হয় তিন জঙ্গির। এই সামরিক অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন মহাদেব’। এদিন অমিত শাহ জানান, গতকাল পহেলগাঁওয়ের সন্ত্রাসবাদী হামলায় তিন জঙ্গিই সেনার গুলিতে মারা গিয়েছে। তিনি বলেন, “এই সন্ত্রাসবাদীরা পহেলগাঁওয়ের হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ‘অপারেশন মহাদেবে’ আমাদের সেনাবাহিনী তাদের নিকেশ করেছে।” হত তিন জঙ্গির নামও জানান শাহ। বলেন, “এই তিন জঙ্গির নাম সুলেমান, আফগান এবং জিবরান।” এই তিন জনকে খাবার জুগিয়ে সাহায্য করেছিল যে ব্যক্তি তাকে আগেই আটক করা হয়েছিল। সেই নিহত জঙ্গিদের দেহ শনাক্ত করেছে।অপারেশন সিঁদুরের পরেও পহেলগাঁও হামলায় যুক্ত জঙ্গিদের খোঁজ না মেলায় বারবার বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়ে বিজেপি সরকার। সোমবার ৩ জঙ্গি নিকেশের পরেও কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি প্রশ্ন তোলে, এরাই কি পহেলগাঁও হামলার তিন জঙ্গি? এরা যে পাকিস্তানি জঙ্গি তার প্রমাণ কী? এদিন বিরোধীদের নিশানা করে শাহ বলেন, “আমি ভেবেছিলাম তাঁরা পহেলগাঁওকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত সন্ত্রাসবাদীদের মৃত্যুর খবর পেয়ে খুশি হবেন। কিন্তু দেখলাম তাঁরা বিষয়টি নিয়ে খুশি নন। বরং হতাশ হয়েছেন।” এইসঙ্গে শাহ জানান, জঙ্গিদের থেকে পহেলগাঁও হামলায় ব্যবহার করা অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তাদের প্যান্টের পকেট থেকে মিলেছে পাকিস্তানি চকলেট। এছাড়াও হত তিন জঙ্গিই যে পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিল, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে ফরেন্সিক পরীক্ষা করানো হয়।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ভারতের ২৫ জন পর্যটক ও এক স্থানীয় নাগরিকের। নৃশংস এই হামলার পর গত তিন মাস ধরে গা ঢাকা দিয়ে ছিল জঙ্গিরা। তবে সম্প্রতি জঙ্গিদের কাছে থাকা টি৮২ আল্ট্রাসেট কমিউনিকেশন ডিভাইস চালু করে জঙ্গি মুসা। এটি এক ধরনে স্যাটেলাইট ফোন যা পহেলগাঁওয়ে হামলা চালানোর সময় ব্যবহার করে জঙ্গিরা। সেই ফোন ফের চালু হতেই সেনাবাহিনী জঙ্গিদের লোকেশন জেনে যায়। শুরু হয়ে যায় অপারেশন মহাদেবের প্রস্তুতি। গত কয়েকদিন ধরে জঙ্গিদের গতিবিধির উপর নজর রাখছিল সেনাবাহিনী। অপেক্ষা করা হচ্ছিল এমন জায়গায় জঙ্গিরা যাক, যেখানে জঙ্গিদের ঘিরে ফেলে নিকেশ করা হবে। পালানোর কোনও পথ থাকবে না। সেই গতকাল অপারেশন চালানো হয়। যা সফল হয়।