দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: বান্ধবীর কাঁধে হাত রেখে গলায় সুরা ঢালছেন এক যুবক, বিয়ার ছিটিয়ে চলছে উৎসব—দৃশ্যটা দেখে মনে হতে পারে কোনও নাইট ক্লাবের রাত। কিন্তু না, ঘটনাস্থল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ফেস্ট! যা দেখে হতবাক সাধারণ মানুষ বলছেন, “এ তো সরষের মধ্যেই ভূত!” আশ্চর্যের বিষয়, বছরখানেক আগে যাঁরা বেলেল্লাপনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন, এবার সেই তারাই মদের বোতল হাতে ধরা পড়লেন কলেজ ফেস্টে। অভিযোগ, গত ২০ এবং ২১ সেপ্টেম্বর ফেস্ট উপলক্ষে হাসপাতাল চত্বরেই বয়েজ হস্টেলের ১ এবং ৭ নম্বর রুমে ব্ল্যাকে দেদার মদ বিক্রি হয়েছে। এবং তা করেছেন কিছু জুনিয়র-সিনিয়র ডাক্তার। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ফেস্ট চলাকালীন উচ্ছৃঙ্খলতার যে ছবি সামনে এসেছে তাই দেখে বিস্মিত অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষরা। এরাই তো বছরখানেক আগে চিৎকার করেছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস!’
আসল চরিত্র সামনে এসে যাওয়ায় মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিক্রম চৌধুরি, বিভাংশু রায়, ইশিতা ঘোষ, প্রহ্লাদ অধিকারী, রুম্পা গোপ, রূপক সিনহা, সাকলাইন মণ্ডল। এঁরা সকলেই বধর্মান মেডিক্যাল কলেজের ফেস্ট কমিটির সদস্য। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ফেস্টের নাম ‘স্পন্দন’। গত ২০ আর ২১ সেপ্টেম্বর এই অনুষ্ঠান হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের গ্রাউন্ডে। সুষ্ঠুভাবে যাতে ফেস্ট হয় তার জন্য একটি ত্রিশ সদস্যের কমিটি গড়ে দিয়েছিল বর্ধমান মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। যার মাথায় ছিলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ডিন ডা. অরুণিমা চৌধুরি, ফার্মাকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. অভিজিৎ দাস, রেডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মৃণালকান্তি ঘোষ, অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিন ডা. সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু অনুষ্ঠানের দিনের যে ছবি সামনে এসছে তাতে চক্ষু চড়কগাছ! চূড়ান্ত বেনিয়ম তৈরির করার পরেও স্পন্দন কমিটির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি হাসপাতালের প্রশাসনিক প্রধানরা।
ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন প্রাথমিকভাবে তাই এঁদেরকেই দায়ী করেছে। সোমবারই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়েছে একদল ছাত্রছাত্রী। তাদের প্রশ্ন, “কীভাবে একটা মেডিক্যাল কলেজে ক্যাম্পাসে ফেস্ট চলাকালীন দেদার মদ বিক্রি হল? ফেস্ট চলাকালীন মদের বোতল হাতে বেলেল্লাপনা করতে দেখা গেল একদল জুনিয়র-সিনিয়র চিকিৎসককে। কোথায় ছিল কর্তৃপক্ষর নজরদারি?”