দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ রামায়ণ শাড়ি! যে শাড়িতে ফুটে উঠেছে রামায়ণের কাহিনি। ১৪ মাস ধরে এমন শাড়ি বুনেছেন তাঁতশিল্পী জীবন বিশ্বাস। নদিয়ার ফুলিয়া সংলগ্ন রাঘবপুর থেকে এ শাড়ি পৌঁছে গিয়েছে অযোধ্যায়। রামলালার প্রাণ-প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে কোনও আমন্ত্রণ না পেলেও ফুলিয়ার তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ী দুই ভাই পিকুল রায় ও অনন্ত রায় তা নিয়ে হাজির হয়েছেন রামরাজ্যে। নদিয়ার তাঁতশিল্পীর সূক্ষ্ম হাতের কাজ যাতে রামমন্দিরে শোভা পায়, এই বাসনায়।
অযোধ্যার মহা উৎসবে এ শাড়ি দান করে পিকুল, অনন্তরা প্রচার মাধ্যমের আলো পেলেও তাঁতশাড়ির মূল শিল্পী জীবন বিশ্বাস কিন্তু সেই তিমিরেই। জীবন বলেন, '১৪ মাস সময় লেগেছে শাড়িটি বুনতে। পিকুল আমার মহাজন। তাই ওর কাছে রামায়ণ-শাড়ি বিক্রি করেছি। দাম পেয়েছি এক লক্ষ দশ হাজার টাকা। আমি এতেই তৃপ্ত। তা ছাড়া কী আর বলব?'
১৪ হাত লম্বা সুদৃশ্য তাঁতশাড়িটি নিয়ে রবিবার সকালে অযোধ্যায় পৌঁছে যান পিকুল ও তাঁর দাদা অনন্ত। একটি মন্দিরে উঠে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পরে দুপুরে রামায়ণ শাড়িটি এই উৎসবের এক কর্মকর্তার হাতে তুলে দেন। এ দিন আবেগতাড়িত হয়ে পিকুল বলেন, 'বাইরে বিক্রি করলে এ শাড়ির দাম পেতাম কম করেও ছ'লক্ষ টাকা। ভগবানের মন্দিরে আমাদের জেলার তাঁত শাড়ির সূক্ষ্ম কাজের নমুনা থাকুক, এই ইচ্ছেতেই অযোধ্যায় এসে এটা দান করেছি। রাস্তায় নেমে আমরা রাজনীতি করি না। হাওড়া থেকে রিজার্ভেশন না পেয়ে ট্রেনের জেনারেল কম্পার্টমেন্টে উঠে কষ্ট করে অযোধ্যায় এসেছি। তবু মনে হচ্ছে কোনও কষ্ট হয়নি।'
পিকুলদের বাড়ি রাঘবপুর মাঠপাড়ায়। আর জীবনের বাড়ি একই গ্রামের পুর্ব পাড়ায়। রানাঘাট বা হাওড়া থেকে ট্রেনে ওঠার সময়ে বা অযোধ্যায় নামার পরে সংবাদ মাধ্যমে পিকুলদের ছবি ছড়িয়েছে। ব্রাত্য থেকেছেন জীবন।পিকুল অবশ্য রামায়ণ শাড়ি নিজে বুনেছেন, এমন দাবি করেননি। শুধু বলেছেন, 'আমার দোকানে শাড়ির জোগান দেন এক তাঁতি, তিনি এটি বুনে দিয়েছেন।'