Livelihood message

1 year ago

Cultivation of strawberries:টবে স্ট্রবেরি চাষ - ভালো ফলন পাওয়া যায়

Cultivation of strawberries
Cultivation of strawberries

 

 দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃস্ট্রবেরী একটি অত্যন্ত রসালো ও সুস্বাদু ফল। স্ট্রবেরী গাছ দেখতে অনেকটা থানকুনি অথবা আলুর গাছের মত, তবে পাতা আরো বড় এবং চওড়া। এটি থানকুনি গাছের মতই রানারের মাধ্যমে চারা চারদিকে ছড়াতে থাকে। পাশ থেকে বের হওয়া পরিণত রানার কেটে আলাদা লাগিয়ে এর চাষ করা সম্ভব। তবে এর বীজ বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে। একটি স্ট্রবেরী গাছ থেকে রানারের মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি করলে বছরে কয়েকশত চারা উৎপাদন করা সম্ভব। স্ট্রবেরী শীত প্রধান দেশের ফল তাই বেশি তাপমাত্রার কারণে বাংলাদেশে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এ গাছ বাঁচিয়ে রাখা খুব কষ্টসাধ্য। স্ট্রবেরী ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকা অবস্থায় টকটকে লাল রঙের হয়। ফলটি দেখতে অনেকটা লিচুর মত। স্ট্রবেরী জীবন রক্ষাকারী নানা পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ। এতে আছে ভিটামিন এ, সি, ই, ফলিক এসিড, সেলেনিয়াম, ক্যালসিয়াম, পলিফেনল, এলাজিক এসিড, ফেরালিক এসিড, কুমারিক এসিড, কুয়েরসিটিন, জ্যান্থোমাইসিন ও ফাইটোস্টেরল। এদের মধ্যে এলাজিক এসিড ক্যান্সার, বার্ধক্য, যৌনরোগ প্রতিরোধের গুণাগুণ আছে বলে জানা গেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. মনজুর হোসেন ১৯৯৬ সালে জাপান থেকে একটি স্বলপ দিবা দৈর্ঘ্য জাতের স্ট্রবেরী বাংলাদেশে আবাদের চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি প্রথমে দেখতে পান যে, এই জাতটি রানারের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি হচ্ছে না। এমনকি ফলের আকার অনেক ছোট হচ্ছে। যা বাণিজ্যিকভাবে চাষের উপযোগী নয়। পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত টিস্যু কালচার ল্যাবে গত কয়েক বছর গবেষণার মাধ্যমে একটি জাত উদ্ভাবনে সক্ষম হন। যা বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা সম্ভব। তার জাতটির নাম এস.টি -৩। এটি অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে মাঠে লাগালে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ফলন দেবে বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান প্রতি গাছ থেকে উক্ত চার মাসে ২৫০-৩০০ গ্রাম পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব। প্রতিটি স্ট্রবেরী গড় ওজন ১০ থেকে ১৫ গ্রাম। অধ্যাপক ড. এম. মনজুর হোসেন গত ৩ বছর ধরে রাজশাহী মহানগীর পদ্মা আবাসিক এলাকার ভদ্রায় আকাফুজি নার্সারীতে এটি সফলভাবে চাষ করে আসছেন। এ বছর তিনি বাংলাদেশ স্ট্রবেরী এ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় চারা সরবরাহ করছেন। অধ্যাপক মনজুর আরও বলেছেন, বাংলাদেশের সব এলাকার সব মাটিতেই স্ট্রবেরী চাষ সম্ভব বলে প্রমাণিত হয়েছে। তবে বেলে দো-আঁশ মাটি সর্বোত্তম। উজ্জ্বল সূর্যালোকিত খোলামেলা  ষ্কাশনের ব্যবস্থাযুক্ত জমি নির্বাচন করতে হবে। মাটির অম্লতা বা ক্ষারতা হতে হবে ৬.০ থেকে ৬.৫-এর মধ্যে। এজন্য স্ট্রবেরী চাষের আগে মাটির অম্লতা বা ক্ষারতা এবং পুষ্টিমাত্রা পরীক্ষা করে সে অনুযায়ী চাষ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। উঁচু মান ও ফলন পাওয়ার জন্য দিনের তাপমাত্রা ২০-২৬ক্ক সে. এবং রাতের তাপমাত্রা ১২-১৬ক্ক সে. হলে ভাল হয়। দিনে কমপক্ষে ৮ ঘন্টা সূর্যালোকের উপস্থিতি স্ট্রবেরীর বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে ভাল। দিনের দৈর্ঘ্য ১৪ ঘন্টার কম হলে স্ট্রবেরীর ফুল আসতে শুরু করে। তাপমাত্রা ৩৮ক্ক সে. এর বেশি হলে স্ট্রবেরীর গাছ মারা যায়।


  বিশেষজ্ঞদের মতে, টবে স্ট্রবেরির চাষ করতে হলে মোটামুটি ১২-১৪ ইঞ্চির টব, এক ভাগ দোঁয়াশ মাটি, এক ভাগ বালি ও এক ভাগ পাতাপচা সার অথবা ভার্মি কম্পোস্ট দিয়ে মাটির মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এতে অল্প গোবর সার দেওয়া যেতে পারে। টবে জল নিকাশি ব্যবস্থা ভালে রাখতে হলে নারকেলের ছোবড়া বা খোসার গুঁড়ো ব্যবহার করা যেতে পারে। স্ট্রবেরির চারার সঠিক পরিচর্যায় সামুদ্রিক শৈবাল ব্যবহার করা যেতে পারে। পোকা-মাকড়ের হাত থেকে গাছের চারা বাঁচাতে নিমতেলের স্প্রে করা যেতে পারে। ফুল ধরার পর নিয়মিত গাছে জল দিতে হবে, টবের মাটি ঝুরঝুরে করে দিতে হবে।এতে মাটিতে পর্যাপ্ত বাতাস ঢুকতে পারবে। সঠিক পদ্ধতি মেনে চলতে পারলে অন্য ফসলের তুলনায় অনেক কম সময়েই স্ট্রবেরি ফলানো যায়।


You might also like!