West Bengal

1 week ago

Kanchanjunga Express Accident: দুর্ঘটনার কারণ গতিবেগের তারতম্য! দাবি রেলের

Kanchanjunga Express Accident (File Picture)
Kanchanjunga Express Accident (File Picture)

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ  কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য সুরক্ষা কমিশনার জনককুমার গর্গের নেতৃত্বে বুধবার থেকে শুরু হলো তদন্তের কাজ। এদিন ডেকে পাঠানো হয় রাঙাপানির স্টেশন ম্যানেজার, রেল গেটের গার্ড, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চালকদের৷ শিলিগুড়ি এনজেপি স্টেশন সংলগ্ন এডিআরএম অফিসে হাজির হন সকলে।

এ দিকে, এদিনই কাটিহার ডিভিশনের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করে একটি তদন্ত রিপোর্ট চিফ সেফটি কমিশনারের কাছে জমা পড়ে। রেল সূত্রে খবর, সেই রিপোর্টে দুর্ঘটনার দিনে মালগাড়ি এবং কাঞ্চনজঙ্ঘার গতিবেগ সংক্রান্ত তথ্যের উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়াও সে সময়ে কর্তব্যরত কর্মীরা কে, কী দায়িত্ব পালন করছিলেন, তা-ও রয়েছে রিপোর্টে।

প্রাথমিক তদন্তে যে তথ্য উঠে আসছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, সোমবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস রাঙাপানি স্টেশনে ঢোকে। ছাড়ে ৮টা ২৭ মিনিট নাগাদ। দুর্ঘটনাটি ঘটে ৮টা ৫৫ মিনিটে। আর মালগাড়িটি ৮টা ৪২ মিনিটে রাঙাপানি স্টেশন ছাড়ে। রাঙাপানি স্টেশন থেকে দুর্ঘটনাস্থলের দূরত্ব আড়াই কিলোমিটারের কাছাকাছি। হিসেব করে দেখা যাচ্ছে, ওই পথ অতিক্রম করতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস সময় নেয় প্রায় ২৮ মিনিট।

অন্য দিকে, মালগাড়ির সময় লাগে ১৩ মিনিট। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মালগাড়ির চালক এবং সহকারী চালক তিরিশ ঘণ্টা বিশ্রাম নেওয়ার পরে ট্রেনে চেপেছিলেন। ফলে টানা ডিউটির জেরে চালকেরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, সেই যুক্তি এক্ষেত্রে খাটছে না। দুর্ঘটনাস্থল নির্মলজোত এলাকায় বজ্রপাতের ফলে সোমবার সকাল ৫টা ৫০ মিনিটে অটোমেটিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়ে।

এর পরে নিউ জলপাইগুড়ি-আলুয়াবাড়ি মেইন রুটের ডাউন লাইন দিয়ে মালগাড়ির আগে মোট সাতটি ট্রেন যায়। চালকেরা সকলেই ম্যানুয়াল মেমো সিস্টেমে গাড়ি নিয়ে এগিয়ে যান। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসও সেই নিয়ম মেনেই এগোচ্ছিল। অন্যদিকে, মালগাড়িটি যাচ্ছিল ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে।

দুর্ঘটনার পরে অভিযোগ উঠেছে চালকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়েও। উত্তর পূর্ব রেলওয়ের কাটিহারের ডিভিশনের লোকো রানিং স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ, উত্তর পূর্ব রেলে অপটিক্যাল কেবল ফাইবার সিগন্যালিং সিস্টেম চালু হলেও এখনও কাটিহারের কোনও ট্রেন চালককে অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তির কোনও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। স্রেফ সিনিয়রদের কাছ থেকে মুখে মুখে জেনে নিয়ে ট্রেন চালাচ্ছেন চালকরা।

লোকো রানিং স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, ম্যানুয়াল মেমো (টি/এ-৯১২) সিস্টেমে গাড়ি চালানোর নিয়মও জানা ছিল না মালগাড়ির চালক অনিল কুমার এবং সহ চালক মনু কুমারের। ফলে টিকিট হাতে পেলেও ‘লাল’ সিগন্যালের সামনে ধীরে ধীরে যে ট্রেন চালাতে হয়, সেটাও তাঁরা বোঝেননি।

রেল সূত্রের খবর, কাঞ্চনজঙ্ঘার চালকের এই প্রশিক্ষণ থাকায় তিনি অবশ্য নিয়ম মেনেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। লোকো রানিং স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রামকিশোর প্রসাদ সিং বলেন, ‘বহু বার রেলের আধিকারিকদের বলা হয়েছে কাটিহার ডিভিশনের চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হোক। কিন্তু সেই কাজ হয়নি।’

লোকো রানিং স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ প্রসঙ্গে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘চালকদের প্রশিক্ষণ না দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।’

অন্যদিকে, উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার বলেন, ‘চিফ সেফটি কমিশনার দুর্ঘটনার তদন্ত করছেন। দুর্ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রায় দশ জন কর্মীর বয়ান এদিন রেকর্ড করা হয়েছে। তার মধ্যে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চালক রাজু বাল্মিকী, সহকারী চালক শৈলেন্দ্র কুমার, রাঙাপানি স্টেশনের কর্মী, গেটম্যান, লাইনম্যানের বয়ানও রেকর্ড করা হয়েছে।’

You might also like!