দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- ১৫ ই আগস্ট মানেই ভারতবাসীর কাছে স্বাধীনতা দিবস। প্রায় ২০০ বছর ইংরেজদের রাজত্ব সহ্য করার পর ১৯৪৭ সালে ১৫ই আগস্ট স্বাধীন ভারতের স্বাদ পান ভারতবাসীরা। ইংরেজদের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে স্বাধীন ভারত গড়ার আশায় ঝরেছে কত কত রক্ত। খালি হয়েছে লাখ লাখ মায়ের কোল। তবে ১৫ ই আগস্টে তেরঙ্গা পতাকা উড়তেই হাসি ফুটেছিল সন্তান হারা মায়েদের মুখে। ১৯৪৮ সাল থেকে প্রতিবছর এই দিনটিকে মাথায় রেখে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়। তবে এই পশ্চিমবঙ্গে এমন কিছু জায়গা রয়েছে, যেখানে ১৫ই আগস্ট নয়, বরং ১৮ই আগস্ট পালিত হয় স্বাধীনতা দিবস। এই নেপথ্যে রয়েছে এক কাহিনী!
ভারতবাসী ব্রিটিশ সরকারের অত্যাচার থেকে বাঁচতে যখন মরিয়া, তখন ভারতীয়দের আন্দোলনে অবশেষে ব্রিটিশ সরকার ভারত ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে ভারত ছাড়ার আগে তারা দেশ বিভাজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। স্যার র্যাডক্লিফ কমিশন বানিয়ে ভারত-পাকিস্তান বিভাজন করে দেন। সেই বিভাজনের নিরিখে নদিয়ার শুধুমাত্র নবদ্বীপের অংশটুকু ভারতবর্ষের অধীনে থাকে। শিবনিবাস সহ কৃষ্ণনগর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের মধ্যে পড়ে যায়। মুসলিম লীগ ১৪ আগস্ট ১৯৪৭ সালে কৃষ্ণনগর পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করে। তারপর নদিয়ার অধিকাংশ মানুষের অসন্তোষে ফেটে পড়েন। খবর যায় ব্রিটিশ সরকারের কাছে। নদীয়াবাসীর আন্দোলনের নড়েচড়ে বসে ব্রিটিশ সরকার। এরপর তার ভুল বুঝতে পেরে ১৭ আগস্ট ১৯৪৭ সালে একটি সংশোধনী ঘোষণা করেন।ওই সংশোধনীতে বলা হয় চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া এবং মেহেরপুর পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং কৃষ্ণনগর, শিবনিবাস এবং রানাঘাট ভারতবর্ষের অন্তর্ভুক্ত হবে। ওই সংশোধনের পরে ১৮ আগস্ট কৃষ্ণনগর পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে ভারতবর্ষের পতাকা উত্তোলন করা হয়। তবে এই জায়গায় ১৮ আগস্ট আর স্বাধীনতা দিবস নয় ভারত ভুক্তি দিবস হিসেবে পালিত হয়। এই দিন নানা অনুষ্ঠানে মেতে ওঠেন সকলে। তার মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য চুর্নী নদীতে মহিলাদের নৌকা প্রতিযোগিতা।