সুজিত দত্ত, বর্ধমান, ২০ অক্টোবরঃ
বাঙালির চলছে উৎসব মরশুম। বিশ্বকর্মা, দূর্গা ও লক্ষ্মী পুজোর পর বাঙালী এবার মেতে উঠেছে কালী পুজো ও দীপাবলি উৎসবে। বর্ধমানে বেশ কিছু ঐতিহাসিক কালীমন্দির রয়েছে যাদের ঘিরে অলৌকিক রহস্যগাঁথা বংশপরাম্পরায় আজও ঘুরে ফেরে মানুষের মাঝে। ওই সব ঐতিহাসিক কালীমন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম বর্ধমান শহরের লাকুড্ডি এলাকার বাইপাসের ধারে দুর্লভা কালীমন্দির। আনুমানিক প্রায় তিনশ বছর আগে তৎকালীন বর্ধমানের মহারাজ তেজচন্দ্র মহাতাব ওই কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জানা যায়, আগে ওই জঙ্গলঘেরা ওই এলাকায় কালীর তন্ত্র সাধনা করতেন তন্ত্র সাধক গোকুলানন্দ ব্রহ্মচারী। লোকমুখে তার অলৌকিক ক্ষমতার কথা শুনে মহারাজ তেজচন্দ্র হঠাৎ ই তার সঙ্গে দেখা করতে যান। সেদিন ছিল অমাবস্যা। কথাবার্তার মাঝে মহারাজা তাকে পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে চাইলে তন্ত্রসাধক গোকুলানন্দ রাজাকে ওই দিন রাতে পূর্ণিমার চাঁদ দেখিয়েছিলেন। রাজা তার ক্ষমতায় মুগ্ধ হয়ে ওই স্থানে তাকে একটি মন্দির নির্মান করে দেন এবং ১০ বিঘা জমিও প্রদান করেন। যেহেতু দেবী এখানে কঠোর সাধনার পর দর্শন দেন অর্থাৎ দেবীর দর্শন অত্যন্ত দুর্লভ বলে দেবী এখানে দুর্লভা কালী নামে পরিচিত। তবে দেবীর নামকরনের বিষয়ে অন্য একটি মতবাদও প্রচলিত আছে। বর্তমান সেবাইত মঙ্গল ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, তন্ত্রসাধক গোকুলানন্দের দেহত্যাগের পর তাদেরই পুর্বপুরুষ দুর্লভ ভট্টাচার্যকে ওই মন্দিরের পুরোহিত হিসাবে নিয়োগ করেন মহারাজা বিজয়চাঁদ। দুর্লভ ভট্টাচার্যও বড় সাধক ছিলেন। তার নাম অনুসারেই নাকি দুর্লভা কালীর নামকরন করা হয়।