দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ঘন জঙ্গলের মধ্যে রাজারানি পাহাড়! কিন্তু একটি পাহাড়ের নাম এরকম কেন? তার খোঁজ করতে গিয়ে সামনে এলো উত্তরবঙ্গের অন্যতম জনজাতি লেপচাদের এক অকথিত ইতিহাস। মহানন্দা অভয়ারণ্যের ভিতরে প্রায় চারশো বছর আগে সেই পাহাড়ে তৈরি দুটি প্রাকৃতিক গুহায় কিছুদিন আত্মগোপণ করেছিলেন লেপচাদের রাজা ও রানি।
মহানন্দা অভয়ারণ্যের ঘন জঙ্গলের মধ্যে অবস্থিত দুটো প্রাকৃতিক গুহা। সেটাই পরিচিত রাজারানি পাহাড়। এই নামের মধ্যেই লুকিয়ে লেপচাদের এক ইতিহাস। এই রাজারানি পাহাড় প্রায় চারশো বছর আগে তৈরি প্রাকৃতিক গুহা। গুহার ভিতরে প্রায় কুড়ি তলা বাড়ির সমান পাহাড়ের চাঁই। রক ক্লাইম্বিং ছাড়া সেখানে পৌঁছানো সম্ভব নয়। তবে, গুহা দু’টি দেখতে খুব সুন্দর। অনায়াসে এখানে মানুষ বাস করতে পারবে।
স্থানীয় মানুষদের একটি পাহাড় গুলমা রাজা এবং অন্যটি গুলমা রানি নামে পরিচিত। লেপচা ভাষায় গুলমা শব্দের অর্থ আত্মগোপন করে থাকা মানুষ। শোনা যায়, একসময় লেপচাদের রাজা ও রানি আত্মগোপণ করতে এই গুহায় বেশ কিছুদিন আশ্রয় নিয়েছিলেন। যদিও এর কোনও প্রমাণ মেলেনি। যদিও লেপচাদের খুব বেশি ইতিহাসের সন্ধান পাওয়া যায় না। ভুটান রাজাদের বারবার আক্রমণের কারণে লেপচাদের ইতিহাস অনেকটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পরবর্তী সময়ে লেপচারা কালিম্পং দখল করে নেয় এবং সেই সময় নষ্ট হয়ে যায় লেপচাদের পুঁথি ও নথিপত্র। তবে, উত্তরবঙ্গের অনেক পাহাড়ি গ্রামে লেপচাদের বাস রয়েছে। পাইন, ধুপির জঙ্গল ধরে মহানন্দা অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে পৌঁছাতে হয় এখানে। এই অঞ্চলে প্রায় ৩৬ রকমের বন্যপ্রাণী এবং ২৪০ প্রজাতির পাখির দেখা পাওয়া যায়। এমনকী এখানে দেখা মেলে এক ধরনের বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির উভচর স্যালামান্ডারের।
যাওয়া ও থাকা - কালিঝোরা বাজার থেকে বাম দিকে রাস্তা ধরে ৪৪ কিলোমিটার পথ গেলেই লাটপানছার। লাটপানছার গ্রাম থেকে জঙ্গলের পথ ধরে মহানন্দা অভয়ারণ্যের দিকে হাঁটা লাগালেই পৌঁছে যেতে পারেন রাজারানি পাহাড়ের কাছে। লাটপানছারে থাকার জন্য বেশ কয়েকটি হোমস্টে রয়েছে। ঘন জঙ্গল, প্রাকৃতিক পুকুর, পাহাড় সব মিলিয়ে লাটপানছার এক অনন্য অভিজ্ঞতা এনে দিতে পারে।