দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ মাইগ্রেনের ব্যথায় যাঁরা কষ্ট পান, শুধুমাত্র তাঁরাই জানেন যে এই যন্ত্রণার ঘাত-প্রতিঘাত জীবনে ঠিক কতটা দুঃসহ! আর দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, প্রচন্ড গরমের মতো প্রচন্ড ঠান্ডাতেও বাড়ে মাইগ্রেনের ব্যথা। এমনকী একবার যন্ত্রণা শুরু হলে সামাল দেওয়া খুব মুশকিল হয়ে পড়ে। তাই মাইগ্রেন নিয়ে নিরন্তর চলছে গবেষণা।
আর এমনই এক গবেষণায় উঠে এসেছে এক চমকপ্রদ তথ্য। যেখানে দাবি করা হয়েছে, মাইগ্রেন বা সাধারণ মাথা যন্ত্রণার ক্ষেত্রে দায়ী শরীরের অন্য এক অংশের মাসল অর্থাৎ মাংসপেশি। আর এই মাসলের কারসাজিতেই বাড়ে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা।
মাইগ্রেনের যন্ত্রণা মারাত্মক। বিশেষত, ক্রনিক মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে একবার ব্যথা শুরু হলে সমস্যা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, রোজকার কাজ করা দুষ্কর হয়ে পড়ে। এমনকী এই যন্ত্রণার থেকে সহজে উপশমও মেলে না।
তবে ভালো খবর হল, সম্প্রতি একটি গবেষণায় এই যন্ত্রণার পিছনে দায়ী যে ভিলেন, তার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই যন্ত্রণার পিছনে মূল আসামী হল ঘাড়ের মাসল।
এতদিন বলা হতো মাইগ্রেনের যন্ত্রণা একবার শুরু হলে ধীরে ধীরে তা মাথা থেকে ঘাড়ে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু নয়া গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে যে, ঘাড়ের এক বিশেষ টিস্যু বা পেশি আচমকা ফুলে উঠলে তা মাইগ্রেনের যন্ত্রণা ট্রিগার করে।
ওই গবেষক দল জানিয়েছে, বিভিন্ন বয়সের ৫০ জন মহিলার উপর এই গবেষণা করা হয়েছিল। ২০ থেকে ৩১ বছরের ওই মহিলাদের MRI রিপোর্ট সহ কেস স্টাডি থেকেই সন্ধান মিলেছে মাইগ্রেন যন্ত্রণার নেপথ্য ভিলেনে এই পেশি। এক্ষেত্রে মাইগ্রেনে ভোগা ওই মহিলাদের প্রত্যেকেরই MRI রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, তাঁদের ঘাড়ের মাংসপেশির উপর চাপ পড়ার কারণে তা ফুলে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, এই বিশেষ পেশিকে T2 বলে চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।
ই রিসার্চ টিমের সদস্য ডাঃ নিকো সলমন জানিয়েছেন, মাইগ্রেনের যন্ত্রণা কমাতে আগে সারাতে হবে ঘাড়ের ওই মাংসপেশিগুলির সমস্যা। পেশির ফোলা ভাব আর ব্যথা কমলে অচিরেই কমে যাবে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা। তবে তিনি এও জানিয়েছেন, কিছু কিছু এমআরআই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, মাইগ্রেনের পাশাপাশি মাথার যন্ত্রণার পিছনেও কলকাঠি নাড়তে পারে ঘাড় ও কাঁধের এই মাসল। তবে শুধু পেশির সমস্যার সমাধান করলেই যে মাইগ্রেন সেরে যাবে, এমনটাও নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। বরং এই বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলেই জানালেন গবেষকরা।
চিকিৎসকেরা বলেন, মাইগ্রেন একটি স্নায়ুবিক রোগ। কখনও কখনও জিনগত কারণেও এটা হতে পারে। শীতে বাড়তে পারে মাইগ্রেনের পেন। তার জন্য প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে জল। পাশাপাশি শরীরকেও গরম রাখতে হবে। এই মরশুমে সব থেকে বেশি দরকার ঘুম। মস্তিষ্ক বিশ্রাম পেলে কমবে মাইগ্রেনের সম্ভাবনা।