দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ পরিবেশ সংক্রান্ত মামলায় জরিমানা হতে পারে রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সংস্থার। নির্দিষ্ট সময়ে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ না-মানায় কেন তাদের জরিমানা করা হবে না, সেই প্রশ্ন তুলে ‘কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (কেএমডিএ) এবং ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল হাউজ়িং ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড’-এর (হিডকো) বিরুদ্ধে শো-কজ় নোটিস জারি করল জাতীয় পরিবেশ আদালত।
সম্প্রতি রাজপুর-সোনারপুর এলাকায় গৃহীত জল প্রকল্প এবং আদি গঙ্গার সৌন্দর্যায়ন সংক্রান্ত একটি মামলায় পরিবেশ আদালত ওই দুই সংস্থার কাছে জানতে চেয়েছে, ‘দ্য ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল অ্যাক্ট, ২০১০’-এর ২৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী কেন তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে না?
প্রসঙ্গত, সংশ্লিষ্ট ধারায় নির্দেশ না মানার জন্য জেল বা জরিমানা বা জেল এবং জরিমানা দুটোই, প্রয়োজনে আরও অতিরিক্ত আর্থিক জরিমানা করার সংস্থানও রয়েছে। এই সংক্রান্ত মূল মামলাটি করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। রাজপুর-সোনারপুর, বারুইপুর পুরসভা এবং কলকাতা পুরসভার অধীনস্থ গড়িয়া ও টালিগঞ্জ এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছিল কেএমডিএ। এই প্রকল্পের জন্য আদি গঙ্গার দু’পাড় সংলগ্ন এলাকায় পাইপলাইন বসাতে হতো।
গঙ্গা থেকে অশোধিত জল সেই পাইপলাইনের মাধ্যমে রিমাউন্ট রোড, আলিপুর এবং গীতাঞ্জলি মেট্রো স্টেশন হয়ে রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকার পরিশোধন প্লান্টে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। পাইপলাইন বসানোর জন্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র পেতে মেট্রো রেলওয়ে এবং কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিল কেএমডিএ।
২০২২ সালের জুলাইয়ে দাখিল করা হলফনামায় কেএমডিএ জানিয়েছিল, মেট্রো ও বন্দর কর্তৃপক্ষের থেকে যথাক্রমে ২০১৯ সালের ২৮ অগস্ট এবং ২০২১ সালের ১৫ জুলাই সেই ছাড়পত্র মিলেছে। তার ভিত্তিতে পাইপলাইন বসানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল। যার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ আদালত ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে কেএমডিএ-কে নির্দেশ দেয়, পাইপলাইন বসানোর পুরো প্রক্রিয়া ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে।
সেই সঙ্গে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। আদি গঙ্গার পুনরুজ্জীবন ও সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের কাজ গত বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ করার এবং সেই সংক্রান্ত ‘কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট’ চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জমা দিতে হিডকোকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু এত দিনেও দুই সংস্থার তরফে সেই রিপোর্ট জমা না পড়ায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করে পরিবেশ আদালত এবং তাদের বিরুদ্ধে শো-কজ় নোটিস জারি করে।
চার সপ্তাহের মধ্যে দুই সংস্থাকে নিজেদের অবস্থান জানাতে বলেছে আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী পয়লা জুলাই। মামলাকারী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘যথেষ্ট সময় দেওয়ার পরেও রাজ্য ঠিক সময়ে কাজ তো শেষ করতে পারেইনি, রিপোর্ট পর্যন্ত জমা দিতে পারেনি। এটা চরম দুর্ভাগ্যের।’