International

1 month ago

Bangladesh:চট্টগ্রামের লালদিঘিতে আট দফা দাবির ভিত্তিতে হিন্দু মহাসমাবেশে লক্ষ লক্ষ মানুষের জনসমুদ্র

Sanatans rally at Laldighi ground in Chittagong for eight point demands
Sanatans rally at Laldighi ground in Chittagong for eight point demands

 

ঢাকা, ২৬ অক্টোবর :‘যদি এই দেশ থেকে আমাদের উচ্ছেদ করে কেউ শান্তিতে থাকতে চান, তা-হলে তাঁরা মনে রাখবেন, এতে বাংলাদেশ হবে আফগানিস্তান-সিরিয়া। গণতান্ত্রিক শক্তি থাকবে না, সাম্প্রদায়িকতার অভয়ারণ্য হবে।’ চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মহাসমাবেশে বলেছেন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর মন্দির, হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগের অভিযোগ করে এর প্রতিবাদে এবং আট দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুক্রবার এই মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে লক্ষ লক্ষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন।

সনাতনীরা মিছিল সহকারে বিভিন্ন স্হান থেকে লালদিঘি এলাকায় সমবেত হতে শুরু করেন সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য। এদিন বিকালে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদিঘি ময়দানে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের গণসমাবেশে চট্টগ্রাম শহর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা, কক্সবাজার এবং তিন পার্বত্য জেলা থেকে সনাতনীরা মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। এক পর্যায়ে গণসমাবেশস্থল লালদিঘির মায়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে জনস্রোত ছড়িয়ে পড়ে কোতয়ালি থানার মোড় থেকে আন্দরকিল্লা, সিনেমা প্যালেস পর্যন্ত সড়ক লোকে-লোকারণ্য হয়ে পড়ে।

সনাতনীরা মিছিল সহকারে স্লোগানে স্লোগানে এলাকা মুখরিত করে তুলেন। স্লোগান ওঠে, ‘আমার মাটি আমার মা, এ দেশ ছেড়ে যাব না’, ‘এক দফা এক দাবি আট দফা মানতে হবে’, ‘প্রশাসন নীরব কেন? জবাব চাই জবাব দিতে হবে’, ‘আমার মায়ের কান্না... বৃথা যেতে দেব না’, ‘আমার দেশ সবার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’, ‘রক্তে আগুন লেগেছে, সনাতনীরা জেগেছে’, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘জয় শ্রীরাম’, ‘জয় হনুমান’ ইত্যাদি।

পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘যে মঞ্চ থেকে আট দফা দাবি ঘোষিত হয়েছে, সেই লালদিঘির ময়দানে আজ হিন্দু সনাতনীদের গণজোয়ার এসেছে‌। আমাদের যত বেশি নির্যাতন করা হবে তত বেশি আমরা এক হবো। এই ঐক্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে বাংলার কৃষ্টি-কালচারের ঐক্য। এই ঐক্য কোনওভাবে খণ্ডিত করা যাবে না। আট দফা দাবি আদায়ের উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে ১৯ সদস্যের সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘৯৩ জন হিন্দুকে পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যাঁরা রাজনীতি করেন না, মানবতার কথা বলছেন, তাঁদের মামলার আসামী করা হচ্ছে। সংখ্যানুপাতিক হারে হিন্দুদের সংসদে আসন বিন্যাস করতে হবে। প্রয়োজনে ভোট বর্জন করবো, গণতন্ত্রের নামে প্রহসন চাই না। ১৫ হাজার কোটি টাকা ধর্ম মন্ত্রালয়ের বরাদ্দের মাত্র ২০০ কোটির মতো সংখ্যালঘুদের জন্য কেন?’

‘আট দফা দাবি আদায় না করা পর্যন্ত প্রতিটি বিভাগে মহাসমাবেশ হবে, জেলায় জেলায় সমাবেশ হবে। এর পর ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ হবে।’সনাতন জাগরণ মঞ্চের মহাসমাবেশে কৈবল্যধাম আশ্রমের মহারাজ কালীপদ ভট্টাচার্য বলেন, ‘সনাতনী সমাবেশ যাতে উজ্জীবিত হয় এজন্য ঐক্যবদ্ধ হন। সনাতনী সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন আট দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। মৃত্যু হবেই, ভয় নেই। মৃত্যুকে ভয় করলে চলবে না, এ মাতৃভূমিতে আমরা উড়ে এসে বসিনি।’

শ্রীশ্রী গোপীনাথ দাস ব্রহ্মচারী গুরুমহারাজ বলেন, যে নতুন বাংলাদেশ গঠন করা হলো সেখানে প্রশাসনের ব্যবস্থা থাকার পরও কেন ষষ্ঠী পূজার দিন প্রতিমা ভাঙা হল? বিসর্জনে কেন ঢিল ছোঁড়া হল। এ সবের জবাব দিতে হবে। সনাতনীরা বাঙলায় জন্মেছে, এখান থেকে বিতাড়িত করার দুঃসাহস কারও নেই। সনাতনী ধর্ম সম্পর্কে কেউ যদি বিদ্রুপ আলোচনা করে তা-হলে কোনও সনাতনী বসে থাকবে না। আমরা কোনও রাজনৈতিক নেতার পা ধরে বাঁচি না। ধর্মান্তরিত করার জন্য একটি চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। চোখ কান খোলা রাখতে হবে। নিজেদের ধর্ম রক্ষার জন্য সকলকে সচেতন থাকতে হবে। দাবি না আদায় পর্যন্ত রাজপথে থাকব। দাবি আদায় না হলে নবজাতক নিয়েও রাজপথে নামব আমরা আমাদের ধর্ম রক্ষার জন্য।

You might also like!