
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: সিনেমা হোক বা টেলিভিশন সিরিয়াল, ক্যামেরার সামনে থাকা শিল্পী ও তারকাদের বহু পুরস্কারের মাধ্যমে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। কিন্তু ক্যামেরার পিছনে নীরবে কাজ করা কলাকুশলীরা প্রায়শই আড়ালেই থাকেন। এবার সেই কলাকুশলীদের মর্যাদা প্রদর্শন করল ফেডারেশন। রবিবার টালিগঞ্জ স্টুডিও পাড়ায় ইতিহাস রচনা হল, আয়োজিত হল ‘ফেডারেশন উৎকর্ষ সম্মান ২০২৪’।
ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ান্স এন্ড ওয়ারকার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান বাস্তবায়িত হয়। বাংলা বিনোদন জগতে এবং দেশের মধ্যেও এটি প্রথমবারের মতো এমন উদ্যোগ। অনুষ্ঠানে ফেডারেশনের অন্তর্গত ২৭টি গিল্ডের বিভিন্ন স্তরের কলাকুশলীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস বলেন, “গত বছর যে সব কলাকুশলী জাতীয় সম্মান পেয়েছিলেন তাঁদেরকে সম্মানিত করেছিল ফেডারেশন। সেই সময় থেকেই ভাবনায় ছিল উৎকর্ষ সম্মান প্রবর্তনের। এই প্রয়াস মূলত সেই সব কলাকুশলীদের মর্যাদা দিতে তৈরি, যাঁরা নীরবে দিনের পর দিন কাজ করে যান, অথচ আলোয় আসার সুযোগ পান না। ফেডারেশন গঠিত হয়েছে মোট ২৭টি গিল্ডের সমন্বয়ে। সেই ২৭টি গিল্ডের মধ্যেই রয়েছেন অসংখ্য সিনেকর্মী, যাঁদের অবদান অসামান্য। তাঁদেরই যোগ্য সম্মান দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই প্রয়াস-যা পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম।”

অনুষ্ঠান শুরু হয় অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে। উপস্থিত ছিলেন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, প্রযোজক নীলাঞ্জনা শর্মা, চিত্রসম্পাদক অর্ঘ্যকমল মিত্র সহ আরও অনেকে। প্রসেনজিৎ বলেন, “এমন সুন্দর উদ্যোগের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ স্বরূপ বিশ্বাসকে এবং ফেডারেশনকে। আমার প্রায় সাড়ে চারশো ছবিতে অভিনয় হয়ে গেল। পাশে কলাকুশলীরা না থাকলে আমরা কেউ অভিনেতা বা পরিচালক হয়ে উঠতাম না। আমরা আজকে এই জায়গায় পৌঁছানোর প্রতিটি কলাকুশলীর অবদান আছে।এত বছর এই জগতে আছি এই ধরনের উদ্যোগ কখনও নেওয়া হয়নি। আরও আগে এই উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল।” দেব বলেন, “সিনেমা হিরো ছাড়া হতে পারে কিন্তু টেকনিশিয়ান ছাড়া সম্ভব নয়। ক্যামেরার পিছনে থাকেন যাঁরা তাঁরাই এই ইন্ডাস্ট্রি মেরুদণ্ড। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। ফেডারেশনের সভাপতির উদ্যোগে এই যুগলবন্দি ঘটল। এরকম আয়োজন দেশের কোথাও হয়নি। বাংলা পথ দেখাচ্ছে এরকমভাবেও কলাকুশলীদের স্বীকৃতি ও সম্মান জানানো যায়।”
উৎকর্ষ সম্মান হাতে পাওয়া কলাকুশলীরা অনুষ্ঠানটিকে অনন্য ও প্রাণবন্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এই উদ্যোগকে দেশের অন্যান্য প্রযোজক ও ফেডারেশনের কাছেও উদাহরণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। ফেডারেশন একটি সুসংগঠিত মঞ্চ তৈরি করল, যেখানে নীরব নায়করা পেলেন মর্যাদা, স্বীকৃতি এবং তাদের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা।
