দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ প্রত্যেক বছর ২৬ জুলাই, কারগিল বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়। ভারত ১৯৯৯ সালে কারগিল যুদ্ধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়লাভ করে, তাই সেসময়ের সৈন্যরা যারা শহিদ হয়েছিলেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে এই ঐতিহাসিক দিনটিতে এখনকার সৈন্যরা। কার্গিল বিজয় দিবস এখনকার ভারতের ইতিহাসে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন।আজ থেকে ২৫ বছর আগে,ভারতের যোদ্ধারা কার্গিলের পাহাড়ে বিজয়ের গল্প লিখেছিলেন। তৎকালীন ভারতীয় সৈন্যরা পাকিস্তানি সৈন্যদের ইচ্ছাকে ধূলোসাৎ করে কার্গিলের চূড়ায় তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলন করেন। ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছিল সেই ঐতিহাসিক দিনটিকে চিহ্নিত করতে প্রতি বছর ২৬ জুলাই কার্গিল বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়। কার্গিলের উঁচু পাহাড়ে প্রবেশ করে পাকিস্তানি সেনারা ঘাঁটি তৈরি করেছিল। ভারতীয় সেনাবাহিনী এ বিষয়ে অবগত ছিল না, তবে ভারতীয় সৈন্যরা যখন জানতে পারে, তখন তারা পাকিস্তান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সৈন্যদের তাড়িয়ে দেয় এবং কার্গিলের চূড়ায় তেরঙ্গা উত্তোলন করে। কার্গিল যুদ্ধ ১৯৯৯ সালে শেষ হয় যখন ভারতীয় সৈন্যরা পাকিস্তানি বাহিনীর দখলকৃত পাহাড়ি পোস্টগুলির নিয়ন্ত্রণ পুনরায় উদ্ধার করে। তাই কার্গিল বিজয় দিবস ভারতীয় ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন!
কার্গিল বিজয় দিবসের ইতিহাসঃ
১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর থেকে সিয়াচেন হিমবাহের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বেশ কয়েকবার মুখোমুখি হয়েছে। ১৯৯৯ সালের মে মাসে, পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী কাশ্মীর এবং লাদাখের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন করতে নিয়ন্ত্রণ রেখায় ঢোকে। এভাবে,তারা ভারতীয় সৈন্যদের লক্ষ্য করার জন্য ভারতীয় ভূখণ্ডে আসে আর পর্বতশ্রেণী দখল করে। ভারত সরকার শীঘ্রই কাজ শুরু করে'অপারেশন বিজয়' দিয়ে জবাব দেয়। দুই মাস ধরে চলেছিল এ যুদ্ধ। ভারতীয় সৈন্যরা ধাপে ধাপে পাকিস্তানি সেনাদের পরাজিত করেছিল। প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে দুই মাস ধরে যুদ্ধটি তিনটি পর্বে হয। প্রথম পর্যায়ে, পাকিস্তানি বাহিনী টাইগার হিল এবং অন্যান্য পোস্টে নিজেদের অবস্থান করে ভারতীয় ভূখণ্ডে আক্রমণ করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে, ভারতীয় সেনাবাহিনীরা পরিবহন রুটটা দখল করে নেয় এবং পাকিস্তানি আক্রমণাত্মক লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করে প্রতিক্রিয়া জানায়। কার্গিল যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে, ভারতীয় সেনাবাহিনী কার্গিল যুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে, ভারতীয় সেনাবাহিনী ভারতীয় বিমান বাহিনীর সহায়তায় পাকিস্তানি সেনাদের সরিয়ে দেওয়ার মিশন সম্পূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছে!
ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা, যিনি ৫২৬ জন সৈন্য নিয়ে শহিদ হোনঃ
২৬ জুলাই ১৯৯৯ সালে সেনাবাহিনী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের জিত ঘোষণা করে। যাইহোক, যুদ্ধে ভারতের পক্ষে ৫২৭ জনের প্রাণ যায়। ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা সেই সাহসী সৈনিকদের একজন যিনি দেশের জন্য লড়াই করে প্রাণ দেন এবং পরম বীর চক্র পান। ওনার বীরত্বের ইতিহাস নিয়ে আগে "LOC Kargil" (2003) নামে সিনেমা হয় এবং তাঁর ভুমিকায় ছিলেন অভিষেক বচ্চন আর "Shershah" (2021) নামক চলচ্চিত্র হয় এবং মূল ভুমিকায় ছিলেন সিদ্ধার্থ মালহোত্রা।
কার্গিল বিজয় দিবসের তাৎপর্যঃ
এই দিনে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্ডিয়া গেটে অমর জওয়ান জ্যোতিতে সৈন্যদের শ্রদ্ধা জানান। বাইরের শক্তির হাত থেকে দেশকে নিরাপদ রাখতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবদান মনে রাখার জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্মৃতিসৌধে শহিদদের পরিবারকেও স্বাগত জানায়। যেহেতু এই ২০২৪ সাল কার্গিল বিজয় দিবসের ২৫তম বার্ষিকী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাই যুদ্ধের স্মৃতিসৌধে পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানের জন্যেও এক বিশেষ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার।