Business

1 year ago

Kolkata : অর্থলগ্নি সংস্থার বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির নিলাম ঘোষণা, আশায় ক্ষতিগ্রস্তরা

auctionconfiscated propertie financial institutions
auctionconfiscated propertie financial institutions

 

কলকাতা, ৭ ফেব্রুয়ারি  : ৬টি অর্থলগ্নি সংস্থার বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির নিলাম আহ্বান করে নোটিশ জারি হল। অল বেঙ্গল চিট ফাণ্ড সাফারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হরেছে। সংগঠনের মতে, আনুমানিক ১৩০/৩২ কোটি টাকার নিলাম হতে পারে। বিচারপতি শৈলেন্দ্র প্রসাদ তালুকদার এক সদস্যের কমিটির তরফে এই নিলামের নির্দেশ দেওয়া হয়।

আগামী ৩ মার্চ বেলা ১১ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত (১) ভিবজিওর গ্রুপ অফ কোম্পানিজ, (২)এম পি এস গ্রুপ অফ কোম্পানিজ, (৩) প্রয়াগ গ্রুপ কোম্পানিজ,(৪) মাল্টিপারপাস বায়স গ্রুপ অফ কোম্পানিজ, (৫) ওয়ারিস গ্রুপ অফ কোম্পানিজ, (৬) টাওয়ার গ্রুপ অফ কোম্পানিজ— এই ৬ সংস্থার জমি, ফ্ল্যাট, এ্যাপার্টমেন্ট এবং কমিটির অধিগ্রহণ করা সম্পদ বিক্রি করবেন।

ঘোষণায় বলা হয়েছে, অধিগ্রহন করা সম্পত্তি যারা কিনতে এবং দেখতে চান, তাঁরা ১৫ ফেব্রুয়ারী থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ঘোষণায় উল্লেখিত সময়ে যথাস্থানে উপস্থিত হতে হবে। এই নিলাম নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটা গুরুত্বপূর্ণ মামলা কয়েকদিন আগে চিটফান্ড বেঞ্চে উঠেছিল। আমানতকারীদের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করে বেঞ্চের কাছে লিখিত আবেদনে জানানো হয় কমিটির অতীতে নিলাম করা বিভিন্ন সম্পত্তি কোন অদৃশ্য যোগসাজশে অর্ধেক বা তারও কম দামে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। বেঞ্চ এই বিষয়ে কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ দাম দেওয়া ব্যাক্তিকেই জমি ও বিভিন্ন সম্পত্তি বিক্রি করতে হবে। গত ৩১ জানুয়ারি বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখার্জির বেঞ্চ এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন।

অল বেঙ্গল চিট ফাণ্ড সাফারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি রূপম চৌধুরী এ কথা জানিয়ে এক বিবৃতিতে মঙ্গলবার বলেন, “কমিটির প্রচেষ্টাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আপনারা জানেন ২০১৩ সালে ঘটে যাওয়া স্বাধীনতার পরে সর্ববৃহৎ আর্থিক কেলেঙ্কারি হোল চিটফান্ড কেলেংকারী। সেই সময় থেকে এরাজ্য সহ সারা দেশে ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষ আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ ছিল সবথেকে বেশি টাকা লুঠ হওয়া রাজ্য। এ রাজ্যেই আনুমানিক ২.৫ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। টাকা লুঠ হয়েছে আনুমানিক ২.৭৫ লাখ কোটি। সেই সময় গড়ে ওঠা আন্দোলনের চাপে রাজ্য সরকার ৫ শো কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও, সেই টাকা পুরোটা বন্টিত হয়নি। সেই সময় এই টাকা সংগ্রহের জন্য তামাক জাতীয় সামগ্রীর উপর ১০% কর ধার্য হয়েছিল। তারও সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি।

রাজ্য সরকার বিচারপতি শ্যামল সেনের নেতৃত্বে এক সদস্যের একটি কমিশন তৈরি করেছিলেন। স্বল্প সময়ে ১৯ লক্ষ আবেদন জমা পরেছিল। হঠাৎ রাজ্য সরকার কমিশনটি কোনও কারন না দেখিয়ে তা বন্ধ করে দেন। তার রিপোর্ট আজ পর্যন্ত দিনের আলো দেখেনি। সেই সময় হাইকোর্টে অসহায় মানুষ, কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কয়েক হাজার মামলা দায়ের করেন। লাখ লাখ মানুষের চরম অসহায়তা দেখে, সেই সময়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলাগুলি ১০০ বছরে সমাধান হবে কিনা বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাঁরই উদ্যোগে হাইকোর্টে চিটফান্ড কেলেংকারী নিয়ে আলাদা বেঞ্চ তৈরি হয়েছিল। সাথে সাথে বিচারপতি শৈলেন্দ্র প্রসাদ তালুকদার এক সদস্যের কমিটি তৈরি করেছিলেন।

রাজ্য সরকার শুরু থেকে সাহায্য না করায় ও পরবর্তীতে করোনা অতিমারি এসে যাওয়ায় কমিটির কাজে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে। বিগত বছরে কমিটি মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে। মঙ্গলবার সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় নিলামের ঘোষণা। এ প্রসঙ্গে কয়েকটি বিষয় কমিটি ও রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করছি। উভয় সরকার ২০১৯ সাল থেকে চিটফান্ড কেলেংকারীতে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরতের ও সমস্যা ১২০ দিনের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় (২০১৯ এর ২৬ জুন) সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। বিচারপতি শৈলেন্দ্র প্রসাদ তালুকদার কমিটির পক্ষে লাখ লাখ মানুষের কয়েক লক্ষ কোটি টাকার সমস্যা মেটানোর বাস্তবিক অর্থে কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পদক্ষেপ গ্রহন করলে, এই বিশাল সমস্যা সমাধান হতে পারে।

আমাদের সংগঠনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকার গত ১০ বছরে শিল্পপতিদের ১৪ লাখ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক ঋন ও ১৩ লক্ষ কোটি টাকা কর মকুব করেছেন। রাজ্য সরকার খেলা, মেলা,উৎসবে শত শত কোটি টাকা দিচ্ছেন। আমাদের সংগঠন গভীর উদ্বেগের সাথে মনে করে সময়ের দীর্ঘসূত্রতায় কোটি কোটি মানুষের টাকা ও বিচার হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আমাদের সংগঠনের দৃঢ় দাবী নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি ও প্রক্রিয়া উভয় সরকার পূরন করুন। ইতিমধ্যে বিগত ৯ বছরে সহস্রাধিক মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। লাখ লাখ মানুষ তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।“

You might also like!