দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ কেন্দ্র মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির মদিনা শহর সফরের তীব্র আপত্তি তুলল কট্টরপন্থী মুসলিমরা। তাদের বক্তব্য, 'সৌদি আরব কী ভাবে একজন অ-মুসলিম মহিলাকে মদিনা শহরে সফর করার অনুমতি দিল?'
সমাজ মাধ্যমে সৌদি আরবের প্রিন্স মহম্মদ বিন সলমান সৌদের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন কট্টরপন্থী মুসলিমরা। কিভাবে ভারতের একজন হিন্দু মন্ত্রী আরও কয়েকজন ভিন ধর্মের প্রতিনিধিদের নিয়ে সৌদি আরবের মদিনা শহরে পা রাখলেন? তাঁকে অনুমতিই বা দেওয়া হল কেন? এইসব প্রশ্নবাণ নিক্ষেপ করা হয়েছে কট্টরপন্থীদের তরফ থেকে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশু উন্নয়ন এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এবং বিদেশ ও সংসদীয় বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এস ভি মুরলিধরনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সোমবার মদিনা শহরে পৌঁছয়। দু'দিন আগেই ভারত এবং সৌদি আরবের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছে। যেখানে ২০২৪ সালের হজযাত্রার জন্য ১ লাখ ৭৫ হাজার ২৫ জনের কোটা নির্ধারিত হয়েছে। এটি দ্বিপাক্ষিক হজ সমঝোতার নাম দেওয়া হয়েছে। এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন জেদ্দায় সৌদির হজ এবং উমরা বিষয়ক মন্ত্রী তৌফিক বিন ফৌজান অল-রবিয়া।
স্মৃতি ইরানি এবং ভারতের প্রতিনিধি দল মদিনায় মরকজিয়া এলাকার পয়গম্বর মসজিদ, যেটিকে অল মসজিদ উল নওবিও বলা হয়, সেখানে পৌঁছন। এরপর ভারতীয় প্রতিনিধি দল উহুদ পর্বদ এবং কুবা মসজিদ ঘুরে দেখে। সেখান থেকে তাঁরা যান ঐতিহাসিক নানা স্থানে। বিশেষ এই কুবা মসজিদকেই মুসলিমদের প্রথম মসজিদ হিসেবে ধরা হয়। মদিনা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে দ্বিতীয় সবচেয়ে পবিত্র শহর। মুসলিমরা বিশ্বাস করেন, মক্কা থেকে ৬২২ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে প্রস্থানের পর মহম্মদ এই মদিনা শহরেই মুসলিম সম্প্রদায়ের গোড়াপত্তন করেছিলেন। মদিনা শহরেই তাঁর অন্তিম নিঃশ্বাস পড়ে এবং সেখানেই মহম্মদকে কবর দেওয়া হয়।
মদিনা সফর নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে একাধিক ছবি এবং তথ্য পোস্ট করেন স্মৃতি ইরানি। তিনি লেখেন, 'আজ মদিনায় ঐতিহাসিক যাত্রায় সামিল হয়েছিলাম। ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র শহরগুলির মধ্যে অন্যতম এই শহরে পয়গম্বর মসজিদ আল মসজিদ উল নওবি, উহুদের পাহাড় এবং কুবা মসজিদে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। ইসলামের প্রথম এই মসজিদে পা রাখতে পেরে অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে।' যদিও তাঁর এই যাত্রা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুসলিম কট্টরপন্থীরা একাধিক কটাক্ষ করতে শুরু করেন। তাঁদের স্মৃতি ইরানি মদিনা সফর নিয়ে তীব্র আপত্তির কথা একাধিক পোস্টে প্রকাশ পায়। একজন হিন্দু মহিলা, মাথা না ঢেকে মদিনার পবিত্র মসজিদে ঘোরাফেরা করছেন, এ দৃশ্য কোনওভাবেই মেন নিতে পারছে না এই কট্টরপন্থীরা।
এক সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহারকারী লেখেন, 'একজন মুশরিকেনকে কেন আমাদের পবিত্র স্থানে প্রবেশ করতে দেওয়া হল?' 'মুশরিকেন' শব্দটির অর্থ যে সমস্ত ব্যক্তি দেবতাদের পুজো করেন। মূর্তিপুজো কিংবা ব্যক্তিপুজোয় বিশ্বাস রাখেন। ইসলামে যেহেতু কেবলমাত্র একজন ঈশ্বর (আল্লাহ) রয়েছেন তাই এই ধরণের বিশ্বাসে তীব্র আপত্তি রয়েছে কট্টরপন্থীদের। অপর এক ব্যক্তি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, 'পয়গম্বরের পবিত্র স্থানে মূর্তিপুজারকদের উপস্থিতিতে স্পষ্টভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। তা সত্ত্বেও এমনটা কেন হল?'