
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দুই বছর আগে অযোধ্যার রামমন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছিল। তবে সে সময় মন্দির নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। এবার সেই কাজ সমাপ্ত হয়েছে। অবশেষে, আজ মঙ্গলবার অযোধ্যার আকাশে সগৌরবে উড়ল ‘ধর্মধ্বজ’। আর এই বিশেষ অনুষ্ঠানটিকে উপলক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, আরএসএস (RSS) প্রধান মোহন ভাগবত এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তাঁদের বক্তব্যে কার্যত 'হিন্দুরাষ্ট্রের মোহনবাঁশি' বাজিয়ে দিলেন।
এদিন মোহন ভাগবত বলেন, ”রামরাজ্যের ধ্বজা উড়েছে। এই নিশান প্রতীক… ধর্মধ্বজ। রামমন্দিরের জন্য যাঁরা প্রাণ দিয়েছিলেন… অশোক সিংঘল, ডালমিয়ার মতো সাধুসন্তরা আজ শান্তি পেয়েছেন। মন্দির তৈরি হতে বহু ঘাম-রক্ত ঝরেছে। অবশেষে সম্পূর্ণ হয়েছে নির্মাণ। আগামীতেও সমস্যা আসবে, কিন্তু সূর্যদেবের রথ দৌড়বে। যেখানে পথ নেই, সেখানেও কার্যসিদ্ধি হবে। ঠিকই লক্ষ্যে পৌঁছবে সূর্যদেবের রথ। রামলালা এসেছেন, তৈরি হয়েছে মন্দির। ধর্ম ও ত্যাগের এই সুফল দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে।” সেই সঙ্গেই তাঁর আহ্বান, ”এই প্রতীক দেখে আপনারা সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যান। যে সংকল্প তখন নিয়েছিলাম আজ তার পুনরাবৃত্তি।”
তাঁরই পাশাপাশি যোগী বললেন, ”আমরা বলতাম, রামলাল্লা হাম আয়েঙ্গে, লাঠি-গোলি খায়েঙ্গে, মন্দির ওহি বানায়েঙ্গে। আজ তা সত্যি হল। প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে আজ ধ্বজারোহণ হল। আমরা তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। ভাগবতজিকেও ধন্যবাদ। এই সংকল্পকে হাতিয়ার করেই আমরা আগামীর দেশ গড়ে তুলব। যে অযোধ্যা একসময় অরাজকতার প্রতীক ছিল, আজ তা সুশাসনের প্রতীক।”তাঁদের বক্তব্যস্থাপনের পর ভাষণ দিতে ওঠেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। চারপাশে তখন রামের নামে জয়ধ্বনি। তিনিও রামচন্দ্রের নামে জয়ধ্বনি দেন। এরপর ধন্যবাদ দেন নিত্যগোপাল দাস, যোগী, ভাগবতকে। বলেন, ”আজ সাংস্কৃতিক চেতনার আরও এক অধ্যায়ের সাক্ষী অযোধ্যা। আজ ভারত রামময়, বিশ্বও রামময়। শতাব্দীপ্রাচীন ক্ষতে আজ প্রলেপ পড়ল। বহু শতকের যন্ত্রণার অবসান। শতাব্দীর সংকল্প আজ পূর্ণতা পেল। আজ সেই যজ্ঞের সমাপ্তি, যার আগুন ৫০০ বছর ধরে জ্বলছিল। সেই যজ্ঞ এক মুহূর্তের জন্যও বিশ্বাস থেকে বিচ্যুত হয়নি।” সেই সঙ্গেই তিনি জানিয়ে দেন, ”ভগবান রামের থেকেই আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। ওঁর ব্যক্তিত্বকে বুঝতে হবে। তাঁকে আত্মস্থ করতে হবে। রাম শুধু ব্যক্তি নন, আদর্শ! ২০৪৭ সালে দেশ যখন স্বাধীনতার শতবর্ষ উদযাপন করবে, আমরা গড়ে তুলব বিকশিত ভারত। রামস্বরাজ। দেশের হাজার বছরের ভিত মজবুত করতে হবে আমাদের। আমাদের রাম জাত নয়, ভক্তি দেখেন, শক্তি নয় সহযোগ দেখেন।” ধর্মধ্বজ নিয়েও আবেগপ্রবণ মোদি বলেন, ”প্রাণ যায়ে পর বচন না যায়ে, এই বার্তা দেবে ধর্মধ্বজ। দরিদ্রদের পাশে সমাজের দাঁড়ানোর বার্তাও দেবে এই পতাকা।”
এদিন তাঁর বক্তব্যে মহিলা, দলিত, আদিবাসী, কৃষক- সমাজে সর্বস্তরের বিকাশের বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী। সব মিলিয়ে এদিন মোদি-যোগী-ভাগবত তাঁদের বক্তব্যের ত্রহ্যস্পর্শে এভাবেই কার্যত হিন্দুরাষ্ট্রের ঘোষণা করে দিলেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
