দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: গরম পড়েছে জোর কদমে। রোদের তেজে হাঁসফাঁস অবস্থা চারপাশে। কিন্তু এই দাবদাহের মধ্যেও বাঙালির মুখে একরাশ হাসি এনে দেয় একটাই নাম—আম! মে মাস পড়তেই বাজার ভরে উঠেছে রকমারি আমে। হিমসাগর, গোলাপখাস, চৌতাসা, ল্যাংড়া, ফজলি, জোয়ান—নামে আর প্রজাতিতে গুলিয়ে যাবে সাধারণ মানুষ। তবে আমপ্রেমী বাঙালির প্রথম পছন্দ, নিঃসন্দেহে হিমসাগর। নরম, রসালো, সুগন্ধি এই আমের জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায় বাজারে। আর এখানেই ঘটে প্রতারণা। চাহিদার সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী হিমসাগরের নামে ল্যাংড়া বা ছোট আকারের ফজলি, এমনকি জোয়ানও চালিয়ে দেন। ফলে ঠকে যান অনেকেই।
কী ভাবে বুঝবেন কোনটি কোন আম? হিমসাগর আমই বা চিনবেন কিভাবে? সমাধান রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য, জেনে নিন কিছু টিপস—
১। গোপালভোগ: এই আম মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বাজারে আসে। এর সবুজ রঙের খোসার গায়ে থাকে, হলুদ দাগ। আমটি পাকার পর হলুদ হয়ে যায়। শোনা যায় এই আমের চাষ বাংলাদেশে শুরু হয়েছিল। সেখানে নরহাট্টার গোপাল নামের এক ব্যক্তি এই আমের চাষ প্রথমে শুরু করেন। সেখান থেকেই এই নামকরণ।
২। গোলাপখাস: গোলাপখাস আমে থাকে লালচে আভা। গোলাপের রঙের মতো খানিকটা রঙও থাকে এই আমে। এই আমের গন্ধ হয় অনেকটা গোলাপের মতো। পাকলে নিচের দিকে এক ধরনের লালচে আভাও পড়ে। হলুদ, লাল, সবুজ মিশিয়ে বেশ দারুণ দেখায় এই আমকে।
৩। চৌসা: জনশ্রুতি, ষোড়োশ শতকে শের শাহ এই আমের নামকরণ করেন। গোটা ভারতেরই অত্যন্ত জনপ্রিয় এই আম। বিশেষত উত্তর ভারতে এই চৌসা আমের রমরমা। এই আম চেনার উপায় হল এর রঙ। এর রঙ অনেকটা সোনালি রঙের মতো উজ্জ্বল হলুদ। আকার লম্বাটে ঘেঁসা৷
৪। হিমসাগর: মে মাসের প্রথমেই বাজারে যে আম ওঠে, প্রায় সব বাঙালির প্রিয় এই আম। হিমসাগর আম কিন্তু এখনই বাজারে ছেয়ে গিয়েছে। এই আম বেশিদিন বাজারে পাওয়া যায় না। মিষ্টত্ব এবং গন্ধের জন্য এই আম অভিনব। এগুলি সাধারণত মাঝারি আকারের হয়। ভিতরে শাস হলুদ থাকলেও বাইরের খোসা হয় সবুজ।
উপরিউক্ত ভিন্ন প্রজাতির আমের মধ্যে হিমসাগর আম বেশি জনপ্রিয়। তবে বাজারে গিয়ে শুধু হিমসাগর লেখায় বা বিক্রেতার মুখের কথায় ভরসা রাখবেন না। নিজের চোখ, নাক এবং একটু সচেতনতা ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে আংশিক কেটে দেখে নিতে পারেন। গরমে হিমসাগরের স্বাদ উপভোগ করুন নিশ্চিন্তে, কিন্তু একটু সচেতন থেকে। কারণ আসল ও নকলের ফারাক বোঝাটাই এবারের আম-মরসুমে আপনার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ!