kolkata

1 month ago

Taslima Nasreen publicly criticized Mamata Banerje : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকাশ্য সমালোচনা করলেন তসলিমা নাসরিন

Taslima Nasreen and mamata banerjee (symbolic picture)
Taslima Nasreen and mamata banerjee (symbolic picture)

 

কলকাতা, ২০ আগস্ট : তিনি আমার বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতি করেছেন।” এই কথায় সামাজিক মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকাশ্য বিরোধিতা করলেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। মঙ্গলবার তসলিমা সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “আমার অতি সাধারণ কোনও মন্তব্যকে মিডিয়া বলে 'বিস্কোরক মন্তব্য'। হাসিনা আর মমতাকে নিয়ে আমার এক লাইনের একটি মন্তব্য নিয়ে মিডিয়া বলছে 'মমতার পাশে তসলিমা'।

কী ছিল সেই মন্তব্য? হাসিনা যেহেতু ভোটে জিতে ক্ষমতায় বসেননি, তাঁকে পদচ্যুত করা যত সহজ, মমতা যেহেতু ভোটে জিতে ক্ষমতায় বসেছেন, তাঁকে পদচ্যুত করা তত সহজ হবে না। দূর থেকে করা আমার এই মতের সঙ্গে মমতার পাশে থাকার কোনও সম্পর্ক নেই। ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে আমার পছন্দ করার কোনও কারণ নেই। তিনি আমার বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতি করেছেন। 'দুঃসহবাস' নামে আমার লেখা একটি মেগা সিরিয়াল মহাসমারোহে শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে তিনি আকাশ ৮কে হুমকি দিয়ে চিরকালের জন্য এর প্রচার বন্ধ করে দিয়েছেন, পুলিশ পাঠিয়ে দুঃসহবাসের সমস্ত বিজ্ঞাপন খুলে নিয়েছেন। মেগা সিরিয়ালটি হয়তো বছরের পর বছর চলতো, আর আমি হাতে নিয়মিত পেতাম আমার জীবিকা নির্বাহের অর্থকড়ি। কিন্তু তিনি তা হতে দেননি।”

একটি বেসরকারি চ্যানেলের নামোল্লেখ করে তসলিমা জানিয়েছেন, তাদেরও কম ক্ষতি করেননি, মেগাসিরিয়ালটির প্রায় ১০০ এপিসোডের স্যুটিং করে রেখেছিল চ্যানেলটি, তাদের সব টাকা জলে গেল। সে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কারণেই। তিনি আমার এবং ওই চ্যানেলের এমন বড় সর্বনাশ করেছিলেন কিছু ইসলামী মৌলবাদীকে খুশি করার জন্য। আর কোনও কারণ নেই। তসলিমা লিখেছেন, “মমতা বন্দোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরই পশ্চিমবঙ্গের দরজা আমার জন্য একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছেন। ভারতবর্ষের ভিসা আমার হাতে, আমি ভারতের যে কোনও রাজ্যেই ভ্রমণ করতে পারি, শুধু পশ্চিমবঙ্গে ছাড়া। যে কলকাতার জন্য আমি প্রাণের টানে ইউরোপের বাস ত্যাগ করে এসেছি, সেই কলকাতায় আমি ২০০৭ এর নভেম্বর মাসের পর থেকে পা রাখতে পারি না। বিভিন্ন সাহিত্যিক এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারি না।

মমতা বন্দোপাধ্যায়কে অনেকগুলো খোলা চিঠি লেখার পরেও তিনি ভ্রুক্ষেপ করেননি। তাঁর ঔদ্ধত্য এবং অহংকার সীমাহীন, একজন নির্বাসিত নিরীহ বাঙালি লেখকের জন্য নারী হয়ে বাঙালি হয়ে তাঁর সামান্য বিবেচনাবোধ, সামান্য সহানুভুতি বা সহমর্মিতা নেই। সিপিএমের কিছুই তিনি মানেন না, কিন্তু সিপিএমের অমানবিক তসলিমা বিতাড়ন তিনি খুব মানেন। যেহেতু তিনি আমার মস্ত ক্ষতি করেছেন, তাই বলে দড়ি ধরে মারো টান বলে আমি তাঁকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাবো, এমন তো প্রশ্নই ওঠে না। গত কয়েকদিন থেকে ইসলামী ফ্যাসিস্টরা যেভাবে বাংলাদেশের ক্ষমতায় আরোহণ করছে, তা প্রত্যক্ষ করায় এবং তার প্রতিবাদ করায় আমি ব্যস্ত। আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে সরিয়ে ইসলামি ফ্যাসিবাদ আসছে, নারীর জীবন দুর্বিষহ করার জন্য আর তো কিছুর দরকার নেই।

পশ্চিমবঙ্গে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে, এবং নারীর নিরাপত্তার জন্য যে আন্দোলন চলছে, সেটি, আমি সশরীরে উপস্থিত না থেকেও যে ১০০ ভাগ সমর্থন করছি, তা বলাই বাহুল্য। চার দশকের বেশি তো নারীর সমানাধিকারের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করছি। এ তো কোনও অজানা তথ্য নয়।

You might also like!