kolkata

4 months ago

Shah Jahan Sheikh:সন্দেশখালির বাঁধের বিরাট ক্ষতি করেছেন শাহজাহান!ফের কাঠগড়ায় শাহজাহান শেখ

Shah Jahan Sheikh
Shah Jahan Sheikh

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ সন্দেশাখলির ‘বাঘ’ শেখ শাহজাহানের (Sheikh Shahjahan) বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ভুরি ভুরি। এর মধ্যে অন্যতম হল বলপূর্বক চাষের জমি নিয়ে নোনা জল ঢুকিয়ে তা মাছের ভেড়ি করে দেওয়া। এর ফলে চরম ক্ষতি হয়েছিল সেখানকার বাঁধের (Dam)। স্থানীয় বাসিন্দারা এই বিষয়ে একেবারে ভালোরকম অবগত ছিলেন। সেই কারণেই ঘূর্ণিঝড় রেমাল আসছে শুনে ভয়ে বুক কেঁপে উঠেছিল তাঁদের।। শেষে ঝড় গতিপথ বদলে ফেলায় আপাতত স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন। কিন্তু একই সঙ্গে তাঁদের বক্তব্য, “আবার কবে যে ঝড় আসবে, আর বাঁধ ভাঙবে, কে জানে!” তাঁদের কথায়, “কতটা ক্ষতি যে গোটা এলাকার করে গিয়েছে শাহজাহান, সেটা শুধু আমরা জানি।”

প্রান্তিক মানুষজনের মতো ভয়টা লুকিয়ে ছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের মনেও। যদি জলের তোড়ে মাটির বাঁধ ভাঙে, তা হলে জবাবদিহি করতে হবে তাঁদেরই। ২০০৯ সালে আয়লার পর থেকে সুন্দরবনে যে কংক্রিটের নদীবাঁধ হওয়ার কথা ছিল, তার কাজ এগিয়েছে সামান্যই। তাই ভোটের মধ্যে বড় বিপর্যয় হলে তার ধাক্কা ভোটবাক্সে কী ভাবে, কতটা পড়বে, তা নিয়ে আশঙ্কা থাকাটা স্বাভাবিক, বলছেন এক স্থানীয় নেতা। বিশেষ করে ভোট যখন দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই এলাকাতেই। সুন্দরবনের এক তৃণমূল নেতার কথায়, “একেবারে ভোটের মুখে বাঁধ ভেঙে বড় কোনও বিপর্যয় ঘটে গেলে বহু প্রশ্নের মুখে পড়তে হত। তেমন কিছু না ঘটায় খানিকটা নিশ্চিন্ত!”

সন্দেশখালি থানার মণিপুর পঞ্চায়েতের তালতলা এলাকার বাসিন্দা সতীশ সর্দার, বিনয় সর্দার, যদু খামরুদের সঙ্গে। দরিদ্র পরিবারগুলি থাকে রায়মঙ্গল নদীবাঁধের পাশেই। সকলেরই কাঁচা বাড়ি। সতীশের কথায়, “বাঁধের অবস্থা সারা বছরই খারাপ থাকে এই এলাকায়। রবিবার রাতে যখন জানলাম, বাঁধ ভাঙেনি, কিছুটা স্বস্তি পেলাম।” তাঁরা অবশ্য জানালেন, দ্রুত কংক্রিটের বাঁধ তৈরি করা দরকার। স্থানীয় অনেকে জানালেন, তালতলা থেকে গোপালের ঘাট পর্যন্ত বেশ কয়েক কিলোমিটার নদীবাঁধের পাশে গত কয়েক বছর ধরে বহু মানুষ অবৈধ ভাবে মাছের ভেড়ি তৈরি করেছেন। ফলে বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়েছে। বাঁধে মাটি দিতে গেলে সেই মাটি পেতেও সমস্যা হয়।

সেচ দফতর সূত্রের খবর, বসিরহাট মহকুমার সন্দেশখালি, হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জে যত নদীবাঁধ আছে, তার মধ্যে ৬-৭ শতাংশ কংক্রিটের। বাকি সবই মাটির। মণিপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান প্রসেনজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “প্রায় তিন কিলোমিটার রায়মঙ্গল নদীবাঁধ কংক্রিটের করার কাজ হচ্ছে। তবে এখনও প্রায় ৯ কিলোমিটার রায়মঙ্গল নদী বাঁধ কংক্রিটের করা দরকার।” তিনিও বলেন, “বাঁধের পাশে বহু মানুষ মাছের চাষ করছেন অবৈধ ভাবে। ফলে বাঁধ দুর্বল হয়ে যায়। প্রশাসনিক ভাবে কড়া পদক্ষেপ করে এ সব বন্ধ করা দরকার।”

কর্ণখালি গ্রাম-সহ বিভিন্ন গ্রামে নদীবাঁধের পাশেই গত কয়েক বছর ধরে গজিয়ে উঠেছে মাছের ভেড়ি। জেলিয়াখালি পঞ্চায়েত এলাকার পিঁপড়েখালিতেও নদী বাঁধের পাশে কয়েকশো বিঘা জমি জুড়ে মাছ চাষ হচ্ছে কয়েক বছর ধরে। স্থানীয় মানুষের দাবি, ‘প্রভাবশালীদের’ এ হেন বেআইনি কারবারের বিরুদ্ধে মুখ খোলে না কেউ। বাঁধের ক্ষতি হচ্ছে জেনেও নড়ে বসে না পুলিশ-প্রশাসন।

বসিরহাট সেচ দফতরের আধিকারিক রানা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পদক্ষেপ করা হয়। তবে এই নিয়ে এখন বেশি কথা বলা যাবে না, বাঁধ নিয়ে ব্যস্ত আছি।”


You might also like!