দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বাঁকুড়ার পর এবার বরাহনগরের প্রার্থী তিনি। ছোটরা স্লোগান দিচ্ছে ‘বরাহনগরের এনার্জি, সায়ন্তিকা ব্যানার্জি’। সায়ন্তিকা ভোট চাইছিলেন শহরতলির গলির মোড়ে। পদ যুগলে হাওয়াই চটি। পোশাকে চাকচিক্যের রেশমাত্র নেই। হাতের নেলস গ্রিন। তবে বরাহনগরের মাটিতে জেতার জন্য এত এনার্জি কোন বলে পাচ্ছেন সায়ন্তিকা?
এ প্রসঙ্গে সায়ন্তিকা জানাচ্ছেন, ‘মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছি, তাতেই মনে হয়েছে নিজের ১০০ শতাংশ দিতে হবে। বরাহনগরের একটা রাজনৈতিক ইতিহাস আছে। দল আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে, তার জন্য কৃতজ্ঞ।’ দলের কয়েক জন তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, মাথায় একটা ছাতা ধরবেন কি না। অভিনেত্রী ‘না’ বলে দিয়েছেন। প্রচারের জিপ নিজেই চালিয়ে বরাহনগর থেকে বেলঘরিয়া ছুটছেন তিনি।
বাঁকুড়ায় হেরে যাওয়ার পর সেখানে যাওয়া বন্ধ করেননি অভিনেত্রী। নিজের হার অ্যাকসেপ্ট করতে পারেননি বলেই কি ময়দান ছাড়লেন না? সায়ন্তিকার বক্তব্য, ‘আমি হারতে পছন্দ করি না। মনে হয়, সব কিছু করব, যাতে জেতা যায়। বাঁকুড়ার মানুষ জানেন, বিধায়ক যত কাজ করেছেন, আমি তার চেয়ে বেশি কাজ করেছি ওখানে।’ কে মাথার দিব্যি দিল যে নির্বাচনে লড়তেই হবে? সায়ন্তিকার উত্তর, ‘আমি প্রথম থেকে মন দিয়ে কাজ করেছি। যদিও বিধায়ক হিসেবে দলকে জয় এনে দিতে পারিনি। তাই জিতে দলকে সেই সম্মানটা ফেরত দেবো।’
এমনও দিন গিয়েছে, যখন সায়ন্তিকা বাঁকুড়া থেকে কাজ সেরে ক্যানিংয়ে এসে স্টেজ-শো করে আবার বাঁকুড়া ফিরেছেন, বলছিলেন সে কথা। রবিবারের দুপুরে সকলের পাতে যখন ভাত, ডাল, মাছ, মাটন, সায়ন্তিকার পাতে তখন অল্প ভাত আর মাংস। বরাহনগরের পোস্ত ভালো সে কথা শুনে বললেন, ‘বাঁকুড়া থেকে বরাহনগর—পোস্ত আর আমায় ছাড়ছে না।’ পার্টি অফিসে এই লাঞ্চের ফাঁকে সৌগত রায়ের সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাপারে আলোচনা করে নিতে ভুললেন না অভিনেত্রী।
বাংলা ছবির দুনিয়ায় এখন মন্দা। তাই কি বিধায়ক হয়ে ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চাইছেন? অভিনেত্রীর জবাব, ‘সে রকম নয়। আমার অভিনয় করার সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে না। কিন্তু রাজনীতিতে আসার পর একটা লক্ষ্য নিয়ে যখন এগোচ্ছি, আগে সেটা ভালো করে করতে চাই।’ লোকসভার প্রার্থী ঘোষণার দিন নিজের নাম না দেখে তাঁর অভিমান হয়েছিল। তবে এটাও ঠিক, দল তাঁকে উপনির্বাচনে টিকিট দিয়েছে।
সেই প্রসঙ্গে সায়ন্তিকা খোলসা করলেন, ‘আমি যোগ্য প্রার্থী বলেই, আমায় বরাহনগর আসন দেওয়া হয়েছে। তবে মিথ্যা বলব না, লোকসভা নির্বাচনকে টার্গেট করে আমি এগিয়েছিলাম। টিকিট না পাওয়ায় অভিমান হয়েছিল।’ অনেকের বক্তব্য, বিজেপির সজল ঘোষ আর বাম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্যের মধ্যে আপনাকে লড়তে দেওয়ার মানে, কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেওয়া। আপনার কী মনে হয়?
‘চ্যালেঞ্জ তাঁকেই দেওয়া হয়, যে সেটা নিতে পারে। বাঁকুড়ায় যে লড়াইটা করেছি, সেটা দেখেই দলের মনে হয়েছে, আমি এ বারও লড়ার যোগ্য’, দাবি সায়ন্তিকার। বাম প্রার্থী যা ভোট পাবেন, তাতে তাঁর জয় আটকাবে না, মনে করেন সায়ন্তিকা। এটাও মনে করেন, বিধায়ক হওয়ার লোভে নিজের ওয়ার্ড ছেড়ে সজল ঘোষ এসে সুবিধা করতে পারবেন না। আত্মবিশ্বাস থাকলেও, যদি হেরে যান নিজেকে কী বলবেন? সায়ন্তিকা হেসে বললেন, ‘আমি হারব না।’