দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: ১৫ই আগস্ট ভারতের জন্য এক গৌরবময় দিন—১৯৪৭ সালে দীর্ঘ ২০০ বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে এই দিনে ভারত স্বাধীনতা লাভ করে। এ বছর সারাদেশে পালিত হবে ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস। লালকেল্লায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী পতাকা উত্তোলন করেন, জাতিকে উদ্দেশ্য করে ভাষণ দেন, এবং দেশের আনাচে-কানাচে জাতীয়তাবাদী চেতনা জেগে ওঠে। কিন্তু আপনি কি জানেন, বিশ্ব ইতিহাসে ১৫ আগস্ট শুধু ভারতের জন্য নয়, আরও কিছু দেশের জন্যও এক বিশেষ দিন?
∆ যেসব দেশ ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা পেয়েছে —
• দক্ষিণ কোরিয়া: দক্ষিণ কোরিয়া ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট জাপানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। আমেরিকান ও সোভিয়েত বাহিনী কোরিয়াকে জাপানি দখল থেকে মুক্ত করে। এমন পরিস্থিতিতে এই দিনটি দক্ষিণ কোরিয়ায় জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়।
• উত্তর কোরিয়া: দক্ষিণ কোরিয়ার মতো উত্তর কোরিয়াও ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট জাপানি দখলদারিত্ব থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু স্বাধীনতার তিন বছর পর এই দুটি দেশ বিভক্ত হয়ে দুটি আলাদা দেশে পরিণত হয়। ১৫ আগস্ট উত্তর কোরিয়াতেও ছুটির দিন।
• লিচেনস্টাইন: ১৮৬৬ সালের ১৫ আগস্ট, বিশ্বের ষষ্ঠ ক্ষুদ্রতম দেশ লিচেনস্টাইন জার্মান দখল থেকে মুক্ত হয়। ১৯৪০ সালের ৫ আগস্ট, লিচেনস্টাইন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ১৫ আগস্টকে স্বাধীনতা দিবসের সাথে একটি জাতীয় ছুটি ঘোষণা করে।
• কঙ্গো: ১৯৬০ সালের ১৫ আগস্ট আফ্রিকার দেশ কঙ্গো ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। এরপর এটি 'ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো' হয়ে যায়। ফরাসিদের দখলের সময় এই দেশটি ফ্রেঞ্চ কঙ্গো নামে পরিচিত ছিল।
• বাহরিন: ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট বাহরিন ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। সেই সময় ব্রিটিশ শাসকরা বাহরিন, আরব এবং পর্তুগাল-সহ অনেক দ্বীপ গোষ্ঠী শাসন করেছিল। যাইহোক, বাহরিন প্রয়াত শাসক ইসা বিন সালমান আল খলিফার সিংহাসনে আরোহণের স্মরণে ১৫ আগস্টের পরিবর্তে ১৬ ডিসেম্বরকে জাতীয় স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উদযাপন করে।
∆ একটি তারিখ, ভিন্ন ভিন্ন লড়াই ও অর্জন —
এই দিনটি শুধু ক্যালেন্ডারে একটি সংখ্যা নয়, বরং একটি প্রতীক—স্বাধীনতার, আত্মত্যাগের এবং নতুন জাতি গঠনের আকাঙ্ক্ষার। ভারত যেমন মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ভগৎ সিংদের আত্মত্যাগে স্বাধীনতা পেয়েছে, তেমনি দক্ষিণ কোরিয়াও স্বাধীনতা আন্দোলনে লাখো মানুষের ত্যাগের সাক্ষী।
১৫ই আগস্ট বহু দেশের ইতিহাসে স্বাধীনতার অধ্যায় লেখা হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে স্বাধীনতা একটি বৈশ্বিক আকাঙ্ক্ষা—ভৌগোলিক সীমারেখা ছাড়িয়ে মানুষের মৌলিক অধিকারের প্রতিফলন।