দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: ঈদে উপলক্ষে আগামীকাল বড় পর্দায় মুক্তি পাবে সালমান খান অভিনীত ছবি ‘সিকান্দার’। এ ছবিতে সালমান আর রাশমিকা মান্দানার জুটি বেঁধে আসছেন। এ আর মুরুগাদস পরিচালিত ছবিতে সালমানকে দুরন্ত অ্যাকশন করতে দেখা যাবে। সম্প্রতি মুম্বাইয়ের এক পাঁচতারা হোটেলে সালমান খান মুখোমুখি হয়েছিলেন কয়েকজন বিনোদন সাংবাদিকের। এ আড্ডায় ছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধিও।
সালমানের সঙ্গে আলাপচারিতার শুরুতেই উঠে আসে ‘সিকান্দার’ ছবির কথা। এ আর মুরুগাদস অ্যাকশনের জন্য জনপ্রিয়। তবে সালমান জানান, এটা পুরোপুরি অ্যাকশনধর্মী সিনেমা নয়। এ ছবিতে অ্যাকশন, রোমান্স পাবে দর্শক।
অভিনেতার ভাষ্যে, ‘ছবিতে আবেগ থাকা খুব জরুরি। অ্যাকশনের সঙ্গে আবেগ জুড়ে গেলে ছবিটা অন্য মাত্রা পায়। এ ছবির আবেগের বন্ধন খুবই মজবুত। মুরুগাদসের আগের ছবিগুলোতে ভরপুর আবেগ ছিল। আমিরের গজনি আর আক্কির (অক্ষয় কুমার) হলিডে ছবিতে অনেক আবেগ ছিল। আমি মনে করি, একটা ছবিতে সব উপাদান থাকা জরুরি। তাহলেই ছবিটা দর্শকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।’
ছবির ট্রেলারে সালমানের মুখে এক সংলাপ আছে, ‘পিএম, সিএম জানি না। তবে এমলএ, এমপি তো হতেই পারব।’ ভবিষ্যতে এই বলিউড তারকার কি রাজনীতিতে আসার কোনো সম্ভাবনা আছে? হেসে এ সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেন সালমান। তিনি বলেন, ‘আমি রাজনীতি বুঝি না। তাই যেটা বুঝি না, সেই ক্ষেত্রে পা রাখতে চাই না।’
‘সিকান্দার’-এর সময় মুক্তি পাচ্ছে দক্ষিণি তারকা মোহনলালের ‘এমপুরান ২’ ছবিটি। দুই ছবির মুখোমুখি সংঘাতের প্রসঙ্গ উঠতে সালমান বলেন, ‘অভিনেতা মোহনলালকে আমি খুব সম্মান করি। এই ছবির পরিচালক পৃথ্বীরাজ সুকুমারন। আমার বিশ্বাস, এটাও এক ধুন্ধুমার সিনেমা হবে। এরপর সানির (দেওল) “জাট” আসছে। আমি চাই যে সব বহুজাতিক কোম্পানি তাদের কর্মচারীদের বেতন যেন বাড়িয়ে দেয়। কারণ, পরপর তিনটি ছবি আসছে (সজোরে হেসে)। জুনিয়র এনটিআর, রামচরণসহ আরও অনেক দক্ষিণি অভিনেতা আমার সামনে ক্যারিয়ার শুরু করেছে। ভেঙ্কিকে (ভেঙ্কটেশ) আমি খুব ভালোভাবে জানি। দক্ষিণের অনেক শিল্পীর সঙ্গে আমি কাজ করেছি।’
দক্ষিণের প্রসঙ্গ উঠতে স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসে বক্স অফিসের কথা। কয়েক বছর ধরে হিন্দি ছবির তুলনায় দক্ষিণি ছবি বক্স অফিসে অনেক বেশি সফলতা পাচ্ছে। সম্প্রতি সানি দেওল বলেছেন যে বলিউডের প্রযোজকদের দক্ষিণের প্রযোজকদের থেকে শেখা উচিত যে কীভাবে একটা ছবি নির্মাণ করতে হয়। সালমান এ বিষয়ে কিছুটা সহমত পোষণ করে বলেন, ‘আসলে দক্ষিণের ছবিতে অনেক বেশি আবেগ থাকে। তাই দক্ষিণি ছবি মানুষের অন্তরকে স্পর্শ করতে পারে। দক্ষিণের নির্মাতারা নিজেদের কাহিনি বলেন। তাঁরা এখান-সেখান থেকে গল্প নিয়ে ছবি বানান না। তবে ভালো ছবি নিশ্চয় চলবে। আবার অনেক সময় ছবি ভালো হয়, কিন্তু ভাগ্য সহায় না হলে ভালো ছবিও বক্স অফিসে চলে না। আবার অনেক সময় ভাগ্যের জোরে বাজে ছবিও বক্স অফিসে চলে যায়। তবে এই নয় যে দক্ষিণের সব ছবি বক্স অফিসে সফলতা পায়। ওখানে প্রতি সপ্তাহে দু-তিনটি ছবি মুক্তি পায়। এর মধ্যে অনেক সিনেমা চলে না।’
আড্ডায় উঠে আসে স্বজনপ্রীতি–বিতর্ক প্রসঙ্গ। সালমান জানান যে তাঁর দাদা আবদুল রশিদ অভিনয় করতেন। তিনি ছিলেন ইন্দোর পুলিশের ডিআইজি।সালমান বলেন, ‘আমার বাবাকে (লেখক সেলিম খান) দাদাজি ইন্দোর থেকে মুম্বাইয়ে নিয়ে এসেছিলেন। দাদাজি অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক ছিলেন। বাবাকে প্রথম সুযোগ দাদাজি দিয়েছিলেন। বাবা সিনেমা–দুনিয়ায় না এলে ইন্দোরে চাষবাস করতেন। আমরা ভাইয়েরা বাবার হাত ধরে অভিনয়ে আসি। মুম্বাইয়ে না থাকলে আমরাও হয়তো কৃষিকাজ করতাম (সশব্দ হেসে)।’ এই সন্ধ্যায় নিজের নানাকে নিয়েও কথা বলেছিলেন সালমান। এই বলিউড সুপারস্টার বলেন যে নানার এই বিয়েতে প্রবল আপত্তি ছিল। সালমানের কথায়, ‘আমার মা-বাবার বিয়েতে ধর্ম কোনো ইস্যু ছিল না। নানার এ নিয়ে কোনো সমস্যা ছিল না। তাঁর সমস্যা ছিল যে বাবা সিনেমাজগতের মানুষ। তবে নানা পরে ভুল বুঝতে পেরেছিলেন। আমার বাবাকে উনি খুব স্নেহ করতেন।’