দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ নিট পরীক্ষায় কারচুপির অভিযোগে উত্তাল দেশ। পরীক্ষায় কারচুপির পর্দাফাঁস। কী ভাবে দুর্নীতি হয়েছে তা এবার প্রকাশ্যে এসেছে। পরীক্ষার আগের দিনই ফাঁস হয়ে গিয়েছিল নিট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র। প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হয়েছিল ৩০ থেকে ৩২ লাখ টাকার বিনিময়ে। পরীক্ষার আগে নিট প্রশ্নপত্র হাতে আসার কথা স্বীকার করে নিলেন গ্রেফতার হওয়া বিহারের এক পরীক্ষার্থী অনুরাগ যাদব। তিনি জানিয়েছেন, আগের রাতে পাওয়া প্রশ্নপত্রের সঙ্গে আসল পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল ছিল। পুলিশি জেরায় অনুরাগ যাদবের মাও প্রশ্নফাঁসের কথা স্বীকার করেছেন।
বিহার পুলিশের ইকোনমিক অফেন্স ইউনিট অনুরাগ যাদব নামে ওই পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে। জেরায় তিনি জানিয়েছেন, ৪ মে তাঁর কাকা অমিত আনন্দ ও নীতীশ কুমার নামে দুইজনের কাছে নিয়ে যান। সেখানেই নিট-এর প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে যান তিনি। শুধু প্রশ্নপত্রই নয়, উত্তরপত্রও ছিল। গোটা রাত বলে উত্তরপত্র মুখস্থ করার 'উপদেশ'-ও দেশ হয় অনুরাগকে। অনুরাগ বিহারের সমস্তিপুরের বাসিন্দা। নিট পরীক্ষায় বসার জন্য কোটা থেকে সমস্তিপুরে ফিরেছিলেন। অনুরাগের কাকা একজন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার।ঘটনায় আয়ুষ নামে এক পরীক্ষার্থীর বাবা অখিলেশকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রশ্নফাঁসের কথা স্বীকার করেছেন তিনিও।
অমিত আনন্দ পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে দানাপুর পুরসভার জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সিকন্দরের সঙ্গে মিলে তিনি প্রশ্নফাঁসের ষড়যন্ত্র করেছিলেন। এক এক পরীক্ষার্থীর কাছে প্রশ্নফাঁস বিক্রি হয়েছিল ৩০ থেকে ৩২ লাখ টাকা দরে। নিট হয়েছিল গত ৫ মে। অমিত জানিয়েছেন, পরীক্ষার আগের দিন তাঁর হাতে প্রশ্নপত্র আসে। তাই টাকা নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র বিলির জন্য তিনি ২৪ ঘণ্টা সময় পেয়েছিলেন। একদিনের মধ্যেই পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি হয়। অমিতের ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে পুলিশ বেশ কিছু পোড়া প্রশ্নপত্র পায়। পুলিশকে অমিত জানিয়েছেন, আগেও বেশ কিছু পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তাঁর হাতে আগাম এসেছিল। কী ভাবে অমিত প্রভাব খাটিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আগেভাগে হাতে পেয়ে গেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এই আবহে এক ধৃত পরীক্ষার্থী দাবি করেছেন, তাঁরা পরীক্ষার আগে যে প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েছিলেন, তার সঙ্গে আসল প্রশ্নের হুবহু মিল আছে।
বুধবার বিহার পুলিশের থেকে নিট প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত তদন্তের রিপোর্ট তলব করেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। প্রসঙ্গত, প্রশ্নপত্র ফাঁস ও পরীক্ষায় কারচুপির অভিযোগে নিট বাতিলের দাবি ওঠে। প্রাথমিক ভাবে সেইসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। তবে গত কয়েক দিনে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রমাণ সামনে এসেছে। এই আবহে নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিহার থেকে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরবর্তী পদক্ষেপ করবে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই নিট-এর প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে অমিত-সহ মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।