Country

3 months ago

NEET 2024 Scam : টাকার বিনিময়ে ‘সেন্টার হাইজ্যাকিং’! নয়া অভিযোগ নিটে

Neet Exam (Symbolic Picture)
Neet Exam (Symbolic Picture)

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ একদিকে নিট পরীক্ষার ২৪ ঘণ্টা আগে প্রশ্ন ফাঁসের বয়ান মিলেছে পাটনায় পুলিশের হাতে ধৃত ১৯ জনকে জেরা করে। অন্যদিকে গুজরাটের গোধরা থেকে নিট পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে দুর্নীতি চক্র চালানোর অভিযোগে শনিবার গ্রেপ্তার হয়েছেন এক স্কুলশিক্ষক ও তাঁর সহযোগী। আবার সেই রাজ্যেই এক ছাত্রীর উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশিট ও নিটের র‍্যাঙ্ক কার্ড ভাইরাল হওয়ায় সমাজ মাধ্যমে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

ওই ছাত্রী নিট পরীক্ষায় ৭০৫/৭২০ পেয়েছেন। এদিকে বোর্ডের পরীক্ষায় ফেল করেছেন ফিজিক্সে (২১/১০০)। টায়েটুয়ে পাশ করেছেন কেমিস্ট্রি (৩১/১০০) ও বায়োলজিতে (৩৯/১০০)। নিটের মেধাতালিকার উপর দিকে এমন কত পড়ুয়া লুকিয়ে রয়েছেন, সে প্রশ্নে শুধু নিট প্রত্যাশী ও তাঁদের অভিভাবকরাই সরব হননি। কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে অল-আউট অ্যাটাকে নেমে পড়েছেন বিরোধী শিবিবের হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীরাও।

ফলে নিট নিয়ে এখন সাঁড়াশি চাপের মুখে এনডিএ সরকার। এদিকে নিট পরিচালনাকারী সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)-র অস্বীকার করার পরেও ক্রমেই মজবুত হচ্ছে প্রশ্ন ফাঁসের তত্ত্ব। এর মধ্যেই অভিযোগের পালে হাওয়া দিয়েছে পাটনা ও গোধরা থেকে একের পর এক পরীক্ষা-মাফিয়া গ্রেপ্তার হওয়ায়। উঠছে ‘সেন্টার হাইজ্যাকিং’-এর অভিযোগও।

যেখানে নির্দিষ্ট কয়েকটি পরীক্ষাকেন্দ্রে পাইকারি হারে পরীক্ষার্থীদের সঠিক উত্তর বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ফলে ‘ব্যাকফুটে’ গিয়ে নিট নিয়ে ঢোঁক গিলছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানও। স্নাতকস্তরে ডাক্তারির অভিন্ন সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা বা নিট-ইউজি নিয়ে যখন দেশজুড়ে বিতর্ক, সেই সন্ধিক্ষণেই শনিবার গুজরাটের গোধরা থেকে খোঁজ মিলেছে বড় র‍্যাকেটের।

গ্রেপ্তার হয়েছেন কোচিং সেন্টারের মালিক-সহ চার জন। এক অভিযুক্তের কাছ থেকে ৭ লক্ষ টাকা নগদও উদ্ধার হয়েছে। ওই কোচিং সেন্টারের মালিকের নাম পরশুরাম রাই। তিনি ‘রাই ওভারসিজ় কোম্পানি’ নামে একটি সংস্থা চালান। গোধরার জয় জলরাম স্কুলের শিক্ষক পরশুরাম তাঁর সহযোগী তুষার ভাটকে সঙ্গে নিয়েই নিট পরীক্ষায় দুর্নীতির চক্র চালাতেন।

আর এখানেই উঠে এসেছে ‘সেন্টার হাইজ্যাকিং’-এর তত্ত্ব। রাই-ভাটরা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিতেন বিপুল অঙ্কের। তার বিনিময়ে পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র লিখে দেওয়া হতো। এর জন্য প্রত্যেকের থেকে ১০ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হতো বলে অভিযোগ। সেই টাকার কিছুটা খরচ করে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে কর্মরতদের ‘কিনে’ নিতেন তাঁরা। ‘বিক্রি হওয়া’ ব্যক্তিদের তালিকায় ইনভিজিলেটর থেকে শুরু করে প্রিন্সিপ্যাল পর্যন্ত রয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

পুলিশ জানিয়েছে, এ ভাবেই ওই জুটি এবার ১২ কোটি টাকা তুলেছিলেন। টার্গেট ছিল ২৬ কোটি তোলার। এদিকে পাটনায় ধৃতরা স্বীকার করেছেন, কী ভাবে তাঁরা উত্তরপ্রদেশের এজেন্টদের থেকে ৫ মে নিট পরীক্ষার আগের দিনই, ৪ মে তারিখেই হাতে পেয়ে গিয়েছিলেন প্রশ্নপত্র।

এমন আবহে বিরোধীদের চাপে পড়ে রবিবার কার্যত দুর্নীতির কথা মেনেও নিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। তাঁর আশ্বাস— ‘এনটিএ-র কোনও আধিকারিকের নাম দুর্নীতিতে জড়ালে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।’ দিনকয়েক আগেও অবশ্য তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল— এনটিএ-র তরফে কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এনটিএ নিয়ে সুর পাল্টালেও বিরোধীদের বিঁধতে ছাড়েননি মন্ত্রী।

তাঁর দাবি, ‘গোটা ব্যাপারটা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। কেবল সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি করে পড়ুয়াদের মানসিক শান্তি বিঘ্নিত করার জন্যই রাজনীতি করা হচ্ছে।’ তবে তিনি জানান, আপাতত দু’জায়গা থেকে দুর্নীতির খবর এসেছে। তাই সরকার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কাউকে রেয়াত করা হবে না।

নিট-এর প্যাটার্ন ইত্যাদি ‘অব্যবস্থা’ নিয়ে দক্ষিণের রাজনীতিকরা বহু দিন ধরেই সরব। ভোটের পর ‘গ্রেস মার্কস’ সূত্রে নয়া বিতর্ক সামনে আসায় সুর চড়াতে শুরু করেছেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা গান্ধীরাও। নিট-কে মধ্যপ্রদেশের ব্যাপম কেলেঙ্কারির সঙ্গে তুলনা করে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত চাইছেন বিরোধীরা। এদিন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, ‘নিট পড়ুয়াদের মধ্যে রাজ্য বা মাধ্যম ভেদে বিভাজন তৈরি করা হয়েছে কি না, তা অবশ্যই বিচার-বিশ্লেষণ করা দরকার। এনটিএ নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। কোনও সন্দেহ নেই, গত দশকে পেশাদারিত্ব হারিয়েছে এনসিইআরটি। ইন্টিগ্রিটি হারিয়েছে সর্বভারতীয় মেডিক্যাল পরীক্ষা।’

নিট নিয়ে তোপ দেগেছেন কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট মল্লিকার্জুন খাড়গে থেকে শুরু করে তামিলনা়ডুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবও।

You might also like!